মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ভারতের ত্রাণ সহায়তার চতুর্থ চালানটি বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় হাই কমিশন।
সোমবার ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ভারতীয় ত্রাণ সহায়তার এই চতুর্থ চালানে রয়েছে দুই লাখ ২৫ হাজার পিস কম্বল, দুই লাখ পিস উলের সোয়েটার ও পাঁচশটি সৌর সড়কবাতি।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে চতুর্থ পর্যায়ের এই ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই সহায়তা বাংলাদেশের প্রতি ভারতের চলমান অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার অংশ। বিশেষ করে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিপুল সংখ্যক বাস্তুহারা মানুষের ঢলে বাংলাদেশের ওপর যে বোঝা আরোপিত হয়েছে সেটি ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে।
২৪ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কর্তৃক কক্সবাজারে ক্যাম্পসমূহে এসব সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।এই সহায়তা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া একটি প্রক্রিয়ার অংশ।
এরআগে ভারত সরকার ‘অপারেশন ইনসানিয়াতের’ অধীনে কক্সবাজার এলাকায় মানবিক সহায়তার প্রথম চালান সরবরাহ করেছিল। ৯৮১ মেট্রিক টনের এই ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, চিনি, লবণ, রান্নার তেল, চা, নুডলস, বিস্কুট, মশারী ইত্যাদি।
২০১৮ সালের মে মাসে, ভারত ৩৭৩ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করে। যার মধ্যে ছিল ১০৪ মেট্রিক টন গুড়ো দুধ, ১০২ মেট্রিক টন শুঁটকি, ৬১ মেট্রিক টন শিশুখাদ্য এবং বর্ষা মৌসুমে ব্যবহারের জন্য ৫০ হাজার রেইনকোট ও ৫০ হাজার জোড়া গামবুট ।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তৃতীয় চালানটি সরবরাহ করা হয়, যেখানে ভারত ১.১ মিলিয়ন লিটার সুপার কেরোসিন তেল এবং ২০ হাজার কেরোসিন স্টোভ হস্তান্তর করেছিল।
ভারতীয় হাই কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সম্প্রতি দেওয়া ত্রাণসামগ্রীগুলো বাস্তুচ্যুত মানুষদের শীতে সাহায্য করবে, আর সৌর সড়কবাতিগুলো ক্যাম্পের জন্য পরিবেশবান্ধব আলোক ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
‘দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠ বন্ধন রক্ষার্থে বাংলাদেশের যে কোন সংকটে তাৎক্ষণিক ভাবে সাড়া দিতে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ। মিয়ানমার থেকে উৎখাত হওয়া মানুষের চাহিদা পূরণে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখতে ভারত প্রস্তুত রয়েছে। এ সহায়তা হবে টেকসই, জনগণকেন্দ্রীক এবং আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য উপকারী।’