রমজান মাসে সবাই তো রোজা রাখতে চায়। কিন্তু রোজা রাখাটা আসলে সবার জন্য সমান ফল বয়ে আনে না। বিশেষ করে যারা অসুস্থ তাদেরকে তো অবশ্যই বাড়তি সতর্ক থাকতে হয় রোজায়। কিডনি রোগীরা রোজায় কী কী সতর্কতা মেনে চলবেন, তা নিয়েই আজকের ডাক্তারী পরামর্শ।
- যারা কিডনি রোগে আক্রান্ত তাদেরকে রোজা রাখার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। কারণ, কিডনির ঔষধ কয়েকটি ধাপে ধাপে দেওয়া হয়। তাই ডাক্তারের সাথে আলোচনা ছাড়া কোনো ভাবেই রোজা রাখা যাবে না।
- কিডনি ডিজিজ দুই ধরনের। কোনোটা হঠাৎ আবার কোনোটা অনেকদিন ধরে। যাদের হঠাৎ ধরা পড়ে, তারা কোনো ভাবেই রোজা রাখতে পারবেন না।
- যারা দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছেন, ব্লাড টেস্ট করার পরে তার মাত্রা যদি .৫-১.২ মিলিমোল প্রতি লিটার থাকে, তবে বুঝতে হবে তারা আসলে স্বাভাবিক মাত্রাতেই আছেন। আর মাত্রাটা যদি বেড়ে ৬ এর উপরে উঠে যায়, তবে অবশ্যই ডায়ালাইসিস করাতে হবে এবং তারা রোজাও রাখতে পারবেন না।
- কিডনি রোগীরা রোজা রাখলেও সব সময় খেয়াল রাখবেন তাদের প্রস্রাব ঠিকমত হচ্ছে কিনা। কিংবা প্রস্রাবের দুর্গন্ধ, রঙ এগুলোতে কোনো পরিবর্তন এসেছে কিনা। এছাড়া ডিহাইড্রেশনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখবেন।
- কিডনি রোগীদের তো সবচেয়ে বড় সমস্যা তাদের প্রস্রাব কম হয়। আর রোজা রাখলে তার সম্ভাবনা আরও বাড়ে। তখন রক্তে পানির পরিমাণ কমে তেলের পরিমাণ বেড়ে যাবে। ফলে শরীরের অনেক জায়গায় রক্ত চলাচল ঠিকমতো হবে না। তাই রোজায় কিডনি সমস্যার পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যাও প্রকট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- রোজা রাখা শুরু করার পরপরই নিয়মিত ডাক্তারের কাছে চেকআপ করাবেন কিডনি রোগীরা। নিজের পছন্দ মতো চললে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
- রোজায় কিডনি রোগীরা খাবার খাওয়ার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। তাদের পানিও খেতে হবে পরিমাণ মতো, নইলে পানি জমে শরীর ফুলে যাবে। এছাড়া লবণ, দু্ধ বা দুধজাতীয় কেনো খাবার, আম, কলা, স্যালাইন, কমলা, খেঁজুর, ডাবের পানি কিছুই খেতে পারবেন না। তাই ডাক্তারের সাথে আলোচনা না করার কেনো বিকল্প নেই তাদের জন্য।
সর্বোপরি কিডনি রোগীরা রোজায় এবং অন্যান্য সময়ে প্রচুর রেস্টে থাকবেন। ঠান্ডা জায়গায় থাকবেন। কারণ, এতে কিডনির কার্যকারিতা বাড়বে।
পরামর্শ দিয়েছেন ডা. নয়নমনি সরকার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।