একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং তার ভাই মুজিবুর রহমান আঙ্গুর মিয়া ও তাদের চাচাতো ভাই আবদুর রাজ্জাককে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বুধবার বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে তাদের বিরুদ্ধে আনা চারটি অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগে মহিবুরকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও বাকি দু’জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এছাড়া দ্বিতীয় অভিযোগে তিনজনকেই ১০ বছর করে, তৃতীয় অভিযোগে ২০ বছর করে এবং চতুর্থ অভিযোগে ৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।
গত ১১ মে এই মামলার কার্যক্রম শেষে রায় অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়েছিল। আসামীদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৪ অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল-১।
তাদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় আকাল আলী ও রজব আলী নামের দুই মুক্তিযোদ্ধাকে পাকিস্তানি বাহিনীর সহায়তায় হত্যা, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এম এ রবের বাড়িতে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, গ্রামের দুই নারীকে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিয়ে নির্যাতন এবং আনফর আলী নামে একজনকে অপহরণ পরবর্তী নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় ২১ অক্টোবর। রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন এবং আসামীপক্ষে ৭ জন সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ১০ মে থেকে দুই পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়।
মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তার ভাই মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া একই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান।
বর্তমানে মহিবুর রহমান বড় মিয়া বিএনপির সক্রিয় সদস্য, আর মুজিবুর রহমান আঙ্গুর জামায়াতের কর্মী, তবে আবদুর রাজ্জাক কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়।
ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রেক্ষিতে গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি এই দুই ভাইকে গ্রেফতার হয়। আর গত বছরের ১৯ মে গ্রেফতার হয় আবদুর রাজ্জাক।