বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা হল যুবাদের হাত ধরে। ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে লাল-সবুজের ক্রিকেটপ্রেমীদের আরাধ্য প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ দিলো অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল।
এই ফাইনালের আগে দুর্দান্ত ফর্মে ছিল ভারতও। বাংলাদেশের মতোই অপরাজিত ছিল দলটি। সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল ১০ উইকেটে। সেই দলটাকে ব্যাটিং-বোলিং দিয়ে নাকানিচুবানি খাওয়ানো টাইগার যুবাদের আগ্রাসন ভরা এক বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখল ক্রিকেটবিশ্ব!
আসরজুড়ে বাংলাদেশের ম্যাচগুলো লক্ষ্য করলে দেখা যাবে শুধু ফাইনালই নয়, সবগুলো প্রতিপক্ষের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে যুবাদের বিশ্বকাপে সেরা হয়েছে আকবর আলীর দল। শুরুটা গ্রুপপর্বে প্রথম প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েকে দিয়ে।
বৃষ্টি ভেজা ম্যাচে পচেফস্ট্রুমে ২৮ ওভারে ১৩৭ পর্যন্ত তুলেছিল জিম্বাবুয়ের যুবারা। পরে বাংলাদেশের জন্য সেই লক্ষ্য নেমে আসে ২২ ওভারে ১৩২। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের ৩৩ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে প্রতিপক্ষ বোলারদের ছাতু বানিয়ে মাত্র ৬৮ বলেই ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
পরের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও একপেশে জয়। স্কটিশদের মাত্র ৮৯ রানে অলআউট করে ১৬.৪ ওভারে ম্যাচ ঘরে তোলে টাইগাররা। ২০ রানে ৪ উইকেট নেন স্পিনার রাকিবুল হাসান।
গ্রুপপর্বে বাংলাদেশকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতার মুখে ফেলেছিল পাকিস্তান। বৃষ্টি ভেজা মাঠে প্রথমে ব্যাট করে ১০৬ রান তুলতেই ৯ উইকেট হারিয়েছিল যুবারা। সে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত আর ফল দেখেনি। পাকিস্তানের চেয়ে শ্রেয়তর রানরেটে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ।
কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ সাউথ আফ্রিকা। যাদের বিপক্ষে ২০১৮, ২০১৯ সালে কোনো ম্যাচই খেলা হয়নি টাইগার যুবাদের। এ দুবছর দেখা না হলেও স্বাগতিকদের পাত্তা দেয়নি বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে তানজিদ হাসান তামিমের ৮০ রানে ২৬১ রান তুলেছিল যুবারা।
এরপর বল হাতে জাদু দেখিয়েছেন রাকিবুল হাসান। বিশ্বকাপের হ্যাটট্রিকের কীর্তিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ১৯ রানে ৫ উইকেট নেন বাঁহাতি অফস্পিনার। প্রতিপক্ষকে ১৫৭ রানে অলআউট করে ১০৪ রানের জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো যুব বিশ্বকাপে সেমির স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
সেমিতে বাংলাদেশের জন্য সব বড় প্রতিপক্ষ হতে পারতো স্নায়ু। নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি এ যুদ্ধেও জয়ী বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডকে ২১১ রানে থামিয়ে দেয়ার পর ৩২ রানে নেই দুই ওপেনার। সেখান থেকে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে দলকে দারুণ জয় উপহার দেন মাহমুদুল হাসান জয়। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে যায় বাংলাদেশ।
শেষে ভারতকে হারিয়ে জিতে ফিরছে বিশ্বকাপটাই।