মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শিশুদের দণ্ড দেয়া অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।
আজকের আদেশের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন: ‘হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। তবে এ আদেশের ফলে ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কেননা, শিশু আইনে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
এর আগে গত ১১ মার্চ বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো: মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শিশুদের দণ্ড দেয়া অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
আদালত তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন: মোবাইল কোর্টে শিশুদের দণ্ড দেয়ার মাধ্যমে একটা সমান্তরাল (প্যারালাল) বিচার ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলা হয়েছে। যেটা সংবিধান পরিপন্থী। আর ১২১ শিশুকে দেয়া মোবাইল কোর্টের ওই দণ্ড কেবল বেআইনিই নয় প্রকারন্তে অমানবিক সিদ্ধান্ত।
আদালত রায়ে আরও বলেন: শিশুদের দেয়া ওই দণ্ড অবৈধ ও বাতিল ঘোষণার ফলে শিশুদের আগামী জীবনে দণ্ডের কোনো প্রভাব পড়ার সুযোগ রইল না। আইনের চোখে তারা নিষ্পাপ।
এর আগে ‘আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দণ্ড’ শিরোনামে পত্রিকার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো: মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন চিলড্রেন’স চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল হালিম ও আইনজীবী ইশরাত হাসান।
এরপর এই হাইকোর্ট বেঞ্চ এবিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির পাশাপাশি আদেশে দেন। আদালত তার আদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্টের) দেওয়া দণ্ডে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অন্তরীণ ১২১ শিশুর মধ্যে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেন।
এছাড়া ১২ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়। উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশের পরই গত ১১ নভেম্বর ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মুক্তি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে থাকা অন্তরীণ শিশুদের জামিন দিয়ে মুক্ত করা হয়।