বিষয়টা আগে থেকেই খবরে ছিল। তারপরও আশা ছিল। কিন্তু চমকে যাওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। লিওনেল মেসি আসেননি। বার্সেলোনার প্রাক-মৌসুম মেডিকেল টেস্টে রোববার উপস্থিত হননি অধিনায়ক। ন্যু ক্যাম্প ছাড়ার ইচ্ছা জানিয়ে আলোচনা-আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা মহাতারকা এর মধ্য দিয়ে হয়ত স্পষ্ট করে দিলেন, সম্পর্কের শেষ সুতোটাও এখন কাটার অপেক্ষা কেবল।
রোববার বার্সেলোনা সময় সকালে, সবার চোখ আটকে ন্যু ক্যাম্পের গেটের দিকে! শেষ পর্যন্ত সত্যিই করোনা পরীক্ষা দিতে চিরচেনা ওই গেটটা দিয়ে এলেন না মেসি। তাতে বার্সেলোনার সঙ্গে তার বিরোধ দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে পৌঁছে গেছে আরেক স্তর উপরে।
সোমবার থেকে নতুন মৌসুম সামনে রেখে নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যানের অধীনে অনুশীলনে নেমে পড়ার করার কথা বার্সেলোনার। তার আগে রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় খেলোয়াড়দের করোনা পরীক্ষা তথা পিসিআর টেস্ট করানো হয়।
আগে থেকেই স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়ে রেখেছিল, মেসি পিসিআর টেস্টে অংশ নেবেন না। সকাল দুপুরের দিকে গড়ানো শুরু করতেই খোলাসা হয়ে গেছে সেটা। দলের সবাই এলেও আসেননি অধিনায়ক, মধ্যমণি মেসি।
পিসিআর টেস্ট দিতে সবার আগে এসেছেন নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যানের ছাঁটাই তালিকায় থাকা ডিফেন্ডার জর্ডি আলবা। এরপর স্ট্রাইকার মার্টিন ব্র্যাথওয়েট। মেসির প্রিয় বন্ধু লুইস সুয়ারেজও এসেছেন, তবে একা একা। তাকে একা দেখেই যা বোঝার বুঝে নিয়েছেন বার্সা কর্মকর্তারা।
করোনা টেস্ট দিতে মেসির না আসাটা অবশ্য কৌশলেরই অংশ। তার আইনজীবীরা এই বুদ্ধি দিয়েছেন বলে খবর। যদি তিনি পরীক্ষা দিতে যান, তবে গত মঙ্গলবার ক্লাব ছাড়ার ব্যাপারে যে ব্যুরোফ্যাক্স পাঠিয়েছেন বার্সাকে, সেটি গুরুত্ব হারাতে পারে। বার্সাও বুঝে যাবে ক্লাব ছাড়ার ব্যাপারে এখনো দ্বিধায় আছেন ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। তাতে ক্লাবকর্তারা আরও শক্ত অবস্থানে চলে যাবে।
মেসির না আসার পেছনে আছে আরেকটা কারণও। ক্লাব ছাড়তে চাইলেও আর্জেন্টাইন তারকাকে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজ দিয়ে যে আইনি লড়াইয়ের হুমকি দিচ্ছিল বার্সা, সেটা নাকি মিথ্যা। কাতালোনিয়ান রেডিও কাডেনা সারের কাছে মেসি-বার্সার ২০১৭ সালের চুক্তির একটি কপি পৌঁছেছে। যার সূত্রে বলা হচ্ছে, বার্সা মেসিকে মিথ্যে ভয় দেখাচ্ছে। মহাতারকার নামে ৭০০ মিলিয়ন রিলিজ ক্লজ থাকলেও সেটা ২০১৯-২০ মৌসুমেই শেষ হয়ে গেছে!
সবদিক থেকে রোববার টেস্ট দিতে না এসে মেসি বুঝিয়ে দিয়েছেন আর নমনীয় হচ্ছেন না। বার্সা যতই আকুতি কিংবা জরিমানা করুক না কেনো, তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় নেই বার্সার নাম!