ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেশটির ক্রিকেটারদের দ্বন্দ্ব গত কয়েকদিন ধরেই চলছে। বোর্ডের প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড ক্রিকেটারদের কাছে পাঠানো চিঠিতে হুমকি দিয়েছেন, চুক্তিতে সই না করলে বর্তমান চুক্তি শেষ হওয়ার পর বেতন দেয়া হবে না ক্রিকেটারদের। পাল্টা হুমকি দিয়েছেন ক্রিকেটাররাও, প্রয়োজনে অ্যাশেজ বর্জনের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তারা।
ক্রিকেটারদের সঙ্গে বোর্ডের দ্বন্দ্ব শুরু হয় বেতন-ভাতা নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা বেতনের বাইরেও বোর্ডের রাজস্বের একটা অংশ পেয়ে থাকেন। গত প্রায় ২০ বছর ধরেই চলে আসছে এই ধারা। নতুন প্রস্তাবিত চুক্তিতে সেটিতে বদল আনা হয়েছে। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাররাই বাড়তি রাজস্বের ভাগ পাবে। এরপর থেকেই শুরু হয় দ্বন্দ্ব।
এ ব্যাপারে দেশটির অন্যতম ক্রিকেট তারকা ডেভিড ওয়ার্নার জানিয়েছেন, তাদের চাওয়া মতো চুক্তি না হলে আসছে অ্যাশেজ বর্জন করতে পারেন ক্রিকেটাররা।
ক্রিকেটারদের প্রতিনিধি হিসেবে ওয়ার্নার বলেন, ‘ব্যাপারটি যদি চূড়ান্ত সীমায় যায়, বোর্ড অ্যাশেজে খেলার জন্য কোন খেলোয়াড়কে পাবে না। তাই আমরা আশা করি, তারা একটি সমঝোতায় আসবে। আমরা এমন কিছু দেখতে চাই না। ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বোঝাপড়ার দায়িত্ব বোর্ডের। সবকিছুই তাদের হাতে।’
অস্ট্রেলিয়ায় না খেললে ভবিষ্যতে কোথায় খেলবেন তাও ঠিক করে ফেলেছেন ওয়ার্নাররা। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কোথাও ক্রিকেট খেলার পথ খুঁজে বের করতে হবে আমাদের। ক্যারিবীয় ক্রিকেট লিগ এবং ইংল্যান্ডে টি-টুয়েন্টি আসরে খেলতে পারি আমরা।’
বয়কটের প্রতি সায় দিয়ে টুইট করেছেন অবসরে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্কও। তিনি লিখেছেন, ‘কতটা জনপ্রিয় হয় পুরুষ ও মহিলা অ্যাশেজ, সেটির অপেক্ষায়…।’
স্টার্কের ওই টুইটে খোঁচা দিয়ে ওয়ার্নার বলেছেন, ‘দারুণ বলেছো স্টার্ক। দলের সেরা খেলোয়াড়দের ছাড়া অ্যাশেজ দারুণ হবে।’
ওয়ার্নার আরও বলেছেন, ‘আমি আশা করবো, আমাদের সমস্যাগুলো বুঝতে সক্ষম হবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। যদি না বোঝে, তবে গ্রীষ্মে আমরা ক্রিকেট খেলবো না। সবকিছুই নির্ভর করছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার উপর। তারা কিভাবে এসিএ’র সাথে চুক্তি করে।’
এসিএ’র প্রধান নির্বাহী অ্যালিস্টার নিকোলসন বলেছেন, ‘এটি সমাধান করার আগ্রহ আমাদের মধ্যে আছে। খেলোয়াড়রা যা চাইছেন, আমরা তা করতে চাই। খেলোয়াড়রা কোন রকম ঝামেলা করতে চাইছে না। তারা অ্যাশেজ খেলতে চায় এবং একটি সমাধানে আসতে চায়।’
‘আমরা উইন-উইন অবস্থায় একটা সমাধানের কাছাকাছি ছিলাম। কিন্তু ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কারণে মাত্র দুই ঘণ্টায় তা শেষ হয়ে গেছে।’
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড বলেন, ‘খেলোয়াড় বর্তমানে শক্ত অবস্থানে আছে। কারণ উদ্দেশ্য সফল করতে চাইছে তারা। তবে তাদের সেরা পারিশ্রমিকই দেয়া হচ্ছে। সমন্বয় রেখেই তা করা হচ্ছে।’