বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিশেষ সাধারণ সভায় সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া ‘বিসিবি গঠনতন্ত্র (সংশোধিত-২০১৭)’ অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। গঠনতন্ত্র অনুমোদনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছে এনএসসি।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বুধবার মিরপুরে কয়েকজন বোর্ড পরিচালকের সঙ্গে তাৎক্ষণিক সভা শেষে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘কাউন্সিলরদের সম্মতি নেওয়ার পর সেটা আমরা সঙ্গে সঙ্গে পাঠিয়ে দেই এনএসসির কাছে। এনএসসি সেটা অনুমোদন দিয়ে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। আপিল বিভাগের রায়টাও যদি দেখেন, ওই রায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী হয়। ওনারা অনুমোদন করতে পারেন কিংবা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। আর তো কিছু করতে পারেন না। যেহেতু পরিবর্তন করতে পারবেন না, অনুমোদন করে দিয়েছেন।’
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার গঠনতন্ত্র অনুমোদন না করতে এনএসসি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে আইনি নোটিশ পাঠান বিসিবির সাবেক পরিচালক ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। ২ অক্টোবর বিসিবির ইজিএমে গঠনতন্ত্রে যে সংশোধনী আনা হয়েছে, সেটি যেন অনুমোদন করা না হয় সে আর্জি জানান তিনি।
এর আগে ২ অক্টোবরের এজিএম ও ইজিএম ডাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত মাসে একটি রিট আবেদন করেন মোবাশ্বের। শুনানি শেষে ২৬ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এক আদেশ দেন। বিসিবির বর্তমান নির্বাহী কমিটিকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই তারিখ থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে রিটে উল্লেখিত বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। তবে ওই রুলের প্রেক্ষাপটে ২ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য বিসিবির এজিএম ও ইজিএম হতে আইনগত কোনও ‘বাধা নেই’ বলেও জানানো হয়।
মোবাশ্বের হোসেন বলছেন, আইনানুযায়ী চার সপ্তাহের মধ্যে শোকজের ব্যাপারে বক্তব্য না দেওয়া পর্যন্ত তারা এটা করতে পারেন না। এরপরও তারা অনুমোদন দিলে ফাঁসবেন। চার সপ্তাহ পর তারা কি বলতে পারবেন, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট এটাকে বৈধ বলেছেন?’
মোবাশ্বের হোসেনের আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘নিশ্চিত করে বলতে পারি এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্র। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করা ছাড়া এর কোনো উদ্দেশ্য নেই। এগুলোর প্রভাব কিন্তু সব জায়গায় পড়ছে। প্রতিটি জায়গায় পড়ছে। আজ যদি মামলা না থাকত এজিএম আগেই করে ফেলতাম। নির্বাচন আগেই ঘোষণা করে ফেলতাম। আমি মনে করি এগুলো সুপরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। সামনে ৯ তারিখে অকল্যান্ডে যাচ্ছি আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে। গঠনতন্ত্র যা যা হয়েছে ওখানে চূড়ান্ত হবে। ওদের মধ্যেও একটা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এ ছাড়া আমি কোনো লাভ দেখছি না। ওনাদেরটা যদি হয় তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেট কীভাবে লাভবান হবে, একটা যদি উদাহরণ দিতে পারেন মেনে নিতাম।’