বায়ুদূষণ রোধে রাজধানীর ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকায় দিনে দু’বার করে পানি ছিটানের আদেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহীদের তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৫ মে তাদের হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
সেই সঙ্গে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে পরিবেশ সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তরের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যা ম্যাজিস্ট্রেট পদায়নের ব্যাবস্থা করতে বলেছেন। কারণ বর্তমানে প্রত্যেক বিভাগে পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। এই একজনের পক্ষে এত বড় এলাকার কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন অসম্ভব।
বায়ুদূষণ রোধে রাজধানীর ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকায় দিনে দুই বার করে পানি ছিটানো বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রতিবেদন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত বলেন: এসব তো কর্পোরেশনের ওয়ার্ক চার্ট। আর এই একই জিনিস ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ৩ বার দেওয়া হল। এগুলোতো আমরা চাইনি। আমরা চেয়েছি আমাদের আদেশের পর কী পদক্ষেপ ও অগ্রগতি সেটা। এরপর আদালত দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহীদের তলব আদেশ দেন।
একপর্যায়ে আদালত বলেন: আমরা রাস্তা দিয়েই চলি। পানি ঠিকমত ছিটানো হয় না। যা হয় তা শুধু ভিআইপি সড়কে। আর এই কয়দিন তো রক্ষ হল ফণী বাবু এসেছিল বলে।
এসময় আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুন্নাহার।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রাজধানী ঢাকায় বায়ুদূষণের কারণ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দু’বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ দেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে ওইদিন আদালত বলেন, রাজধানী ঢাকার যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এমনভাবে ঘিরে ফেলতে হবে, যাতে শুকনো মৌসুমে ধুলো ছড়িয়ে বায়ু দূষণ বাড়তে না পারে। সেই সাথে ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকায় দিনে দুই বার করে পানি ছিটাতে হবে। এবং আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে হবে।
পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) এর করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।