শুরুর দিকে জুটি ধরে রান তোলা যায়নি ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফেরার মিছিলে। বড় সংগ্রহ তাই গড়া হয়নি বাংলাদেশের। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ সপ্তম উইকেট জুটির লড়াইয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রান। মাত্র ২ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি মুশফিক। তবে পরিস্থিতি বিচারে ১১০ বলে ৯৮ রানের অপরাজিত ইনিংসটি তিন অঙ্ক ছোঁয়ার চেয়েও যেন বেশি কিছু!
প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের মন্থর উইকেটে এখন বোলারদের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ। সিরিজে সমতায় ফিরতে বোলারদের করতে হবে দারুণ কিছু। এই মাঠেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কা তুলেছিল ৩১৪ রান। সে জায়গায় বাংলাদেশের দেয়া ২৩৯ রানের লক্ষ্য মামুলিই লঙ্কানদের জন্য। তারপরও খেলাটার নাম যে ক্রিকেট!
১১৭ রানে ৬ উইকেট হারালে শঙ্কা জাগে পুরো ৫০ ওভার টিকে থাকতে পারবে তো বাংলাদেশ! মুশফিক-মিরাজ মিলে ৮৪ রানের জুটি গড়ে সেটি সম্ভব করেন। ৪৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। খেলেন ৪৯ বল, মারেন ৬টি বাউন্ডারি। সিরিজে টানা দুটি ফিফটি ছোঁয়া মুশফিক খেলেন শেষ অবধি। হার না মানা ৯৮ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও একটি ছয়ের মার।
তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এ ম্যাচেই ব্যক্তিগত ৬ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক। মাইলফলক থেকে ৮ রান দূরে ছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। ২০০৬ সালে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু করা মুশফিকের ৬ হাজার রান ছুঁতে লাগল ২১৫ ম্যাচ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল খুব বাজে। বিশ্বকাপের শেষ চার ম্যাচে বোল্ড হওয়া তামিম ইকবাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজেও সেই ধারা ধরে রাখেন। শুক্রবার প্রথম ওয়ানডেতে রানের খাতা খোলার আগেই লাসিথ মালিঙ্গার দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড হন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মালিঙ্গা ছিলেন না; তবে তার দেখানো পথে হেঁটেছেন অন্য পেসাররা।
লাহিরু কুমারা, নুয়ান প্রদীপ ইয়র্কার মেরে তামিমকে বোতলবন্দী করে রাখেন শুরু থেকেই। আরেকপ্রান্ত থেকে তার উইকেটটি তুলে নেন ইসরু উদানা। এ বাঁহাতি পেসারের অফস্টাম্পের বাইরের বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে ভেতরে টেনে আনেন তামিম। ৩১ বল খেলে ১৯ রান করে ফেরেন সাজঘরে।
তার আগে প্রদীপের বলে এলবিডব্লিউ হন সৌম্য সরকার। এ বাঁহাতি ১১ রান করেন ১৩ বল খেলে। দলীয় ৩১ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। তিনে নামা মোহাম্মদ মিঠুনও (১২) ক্রিজে অনেকক্ষণ সংগ্রাম করে ফিরে গেছেন সাজঘরে। ৫২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে সিরিজে টিকে থাকার ম্যাচে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৬), সাব্বির রহমান (১১) ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১৩) নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। একশর আগে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। দলের দুর্দশা থেকে মান বাঁচান মুশফিক। তার সংগ্রামী ইনিংসকে আরও রঙিন করে তুলতে পারেন কেবল বোলাররাই।