অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের অচেনা রূপ নতুন নয়! এরআগেও তিনি নতুন লুকে চমকে দিয়েছেন তার দর্শক অনুরাগীদের। সেটা হোক কোনো ফটোশুট, বিজ্ঞাপন কিংবা নাটকে! আরো একবার নতুন লুকে লাক্স সুপারস্টার খ্যাত এই তারকা অভিনেত্রী।
তবে এবার শুধু অচেনা লুকই নয়, সঙ্গে যোগ হলো প্রতিবাদী রূপ! যেন এই সময়ের নারী নিপীড়নের খণ্ডচিত্র। একাধিক স্থিরচিত্র দেখে অন্তত এমনটাই বোঝা গেলো।
তবে স্থিরচিত্র দেখে এক পলকেই বাঁধনকে চিনে ফেলা বোধহয় কারো পক্ষেই সম্ভব নয়! প্রশ্ন আসতে পারে, বাঁধনের এই রূপ কেন? এটি কি কোনো বিজ্ঞাপন, সিনেমা নাকি ওয়েবের কাজ?
জানতে চাইলে বাঁধন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমার আসন্ন মিউজিক্যাল ফিল্ম এর কয়েকটি স্থিরচিত্র এগুলো। কাজী নজরুল ইসলামের ‘জয় হোক’ গান অবলম্বনে মিউজিক্যাল ফিল্ম নির্মাণ করছেন পিপলু আর খান। অর্ণবের সংগীতায়োজনে যে গানটি নতুন করে কণ্ঠে তুলেছেন সুস্মিতা আনিস।
মিউজিক্যাল ফিল্মে যুক্ত হওয়া নিয়ে বাঁধন বলেন, গানটা অসাধারণ। প্রথমে গানটি শোনার পর আমার গায়ে কাঁটা দিয়েছে। আমি আসলে কেঁদে ফেলেছি। কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে, আমার ভেতরের কথাগুলো কেউ বলে দিচ্ছে। তাই পিপলু ভাই যখন আমাকে গানটি নিয়ে মিউজিক্যাল ফিল্ম নির্মাণের কথা বললেন, এবং জানালেন এতে আমাকে নিতে চান। আমি চোখ বুজে রাজি হয়েছি, একবাক্যে। কিচ্ছু চিন্তা করিনি।
অভিনেত্রী বলেন, এটির শুট করতে গিয়ে টানা দুই দিন নদীর মধ্যে ছিলাম।
বাঁধন জানান, ফেব্রুয়ারির ২৬ ও ২৭ তারিখে বান্দরবানের প্রত্যন্ত অঞ্চল থানচি থেকে নৌকায় তিন ঘন্টার পথ পেরিয়ে রিমাক্রির একটি প্রকৃতি ঘেরা লোকেশনে হয়েছে মিউজিক্যাল ফিল্মটির দৃশ্য ধারণ। শুটিং শেষে ১ মার্চ তিনি ঢাকায় ফেরেন।
মিউজিক্যাল ফিল্মটিতে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে লাক্স সুপারস্টার খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, নেটওয়ার্কের বাইরে থাকতে হবে, বা কোথায় যেয়ে থাকবো- এসবকিছু আমার মাথায় কাজ করেনি এমন প্রস্তাব পাওয়ার পর। কাজটা করতে খুব কষ্ট হয়েছে, কিন্তু আমি কষ্টটা ফিল করিনি। কারণ আমার মনে হয়েছে, আমার ভেতরের না বলা কথাগুলো, চাপা কষ্টগুলো, ক্ষোভগুলো- আমি কিছুটা হলেও প্রকাশ করতে পেরেছি এই মিউজিক্যাল ফিল্মে। এটা রিলিজের পর দর্শক হয়তো বুঝতে পারবেন।
নজরুল অসাধারণ একজন মানুষ। তাকে আমরা বিদ্রোহী কবি হিসেবেই চিনি। সারা জীবন যিনি সাম্যের কথা বলেছেন, মুক্তির কথা বলে গেছেন। নজরুল সামগ্রিক মুক্তির কথা বলে গেলেও মিউজিক্যাল ফিল্মে নারী মুক্তির কথাই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে জানান বাঁধন। তিনি বলেন, নারীরা সব জায়গায় সব কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, এবং তাদের ভেতরের ক্ষোভ কষ্ট ভয় এবং নিপীড়নগুলো দৃশ্যে দৃশ্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
‘‘রবে না এ শৃঙ্খল উচ্ছৃঙ্খলতার/বন্ধন কারাগার হবে হবে চুরমার, পার হবে রাধার গিরি মরু পারাবার– নির্যাতিত ধরা মধুর, সুন্দর প্রেমময় হোক, জয় হোক জয় হোক।’’- নজরুলের এমন দাপুটে কথাগুলোর সাথে দৃশ্য গেঁথে কীভাবে মিউজিক্যাল ফিল্মটি নির্মাণ করছেন পিপলু আর খান, আর বাঁধনই বা নিজেকে কতোটা মেলে ধরতে পেরেছেন- দর্শক নিশ্চয় সেই অপেক্ষায় থাকবে!