১৭ বছরের টগবগে তরুণ তখন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। কুয়েতের বিপক্ষে অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়া কাপের ম্যাচ খেলতে নড়াইল থেকে এলেন বিকেএসপিতে। মুশফিকুর রহিম সবে ভর্তি হয়েছেন সেখানে। ছাত্র হওয়ায় দায়িত্ব পড়ল বাউন্ডারি লাইন থেকে বল কুড়িয়ে দেয়ার। সুযোগ এসে গেল চোখের সামনে নড়াইল এক্সপ্রেসের বোলিং দেখার। প্রথম দর্শনেই অভিভূত হয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।
মাশরাফীর তখনও জাতীয় দলে অভিষেক হয়নি। অবশ্য কৈশোরেই গতির ঝড় তুলে ছিলেন আলোচনায়। বিকেএসপির মাঠে সেদিনের বোলিং, বলবয়-মুশফিকের চোখে মাশরাফীর বোলিংয়ের গতি ছিল এককথায় অবিশ্বাস্য। শনিবার রাতে ফেসবুকে লাইভ আড্ডায় মাশরাফীর কাছে তামিম ইকবাল জানতে চান তার সবচাইতে গতিময় স্পেল সম্পর্কে।
মাশরাফী বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে ২০০১ সালে প্রথম টেস্টে চা-বিরতির পর একটি স্পেল ছিল সবচেয়ে জোরের। সাত ওভারের স্পেল ছিল। সব ডেলিভারিই ১৪০-এর উপরে গতি ছিল। ১৪৫-১৪৬ কিলোমিটার গতিতে বল করেছি সেদিন। সর্বোচ্চ ১৪৭-১৪৮ কিলোমিটার গতির ডেলিভারি ছিল। কেয়ার্নস, অ্যাডাম প্যারোরেকে মেরেছি ওই ডেলিভারি। ওটাই ছিল আমার সবচেয়ে জোরের ডেলিভারি।’
মুশফিক তখন জানান মাশরাফীর বোলিং দেখার প্রথম রোমাঞ্চের কথা, ‘নিউজিল্যান্ড সফরের আগে মাশরাফী ভাইয়ের লাইভ ম্যাচ দেখিনি। যখন বিকেএসপিতে ভর্তি হই। অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়া কাপ। তখন খেলা হলে আমরা বলবয় থাকতাম। বাউন্ডারি লাইনে বল আসত। আমার লাইফে প্রথম অত জোরে বল দেখেছি মাশরাফী ভাইয়ের। অবিশ্বাস্য! ওরকম জোরে বল, রানআপও বিশাল। অমন জোরে বল তার আগে কাউকে করতে দেখি নাই। ওইদিন উনি ফিফটিও করছিল তো, তখন একটা বল আমিও ধরেছি। খুশিও ছিলাম, মাশরাফী ভাই বলটা মারছে, আমি সেটা ধরেছি!’
মাশরাফীকে ১৯ বছর আগের ঘটনা মনে করিয়ে দেন মুশফিক। মাশরাফী আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘আনলাকি যে ফিট থাকতে পারিনি।’ দুই হাঁটুর লিগামেন্টে একের পর এক অপারেশন হওয়ায় ক্রিকেট খেলতেই মানা করেন তার ডাক্তার। তারপরও খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন মাশরাফী। বাধ্য হয়েই গতির সঙ্গে আপোষ করতে হয়েছে। এই প্রজন্মের মাশরাফী ভক্তরা এক্সপ্রেস রূপটা দেখতে পারছেন না তাই।