‘চাইম’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট হিসেবে জনপ্রিয় সে সময়ের খালিদকে আমরা অনেকেই পাইনি। তবে এই প্রজন্মের আমরা আমাদের প্রিয় শিল্পী খালিদকে খুঁজে নিয়েছিলাম তার হৃদয় ছোয়া সব গানের মাদকতায়।
খালিদের গান হাজারো তরুণ মনকে উদ্বেলিত করেছে আবেগ আর ভালোবাসা মিশ্রিত পাওয়া না পাওয়ার শূন্যতায়। বিশেষ করে কলেজ জীবনের তারুণ্য দীপ্ত সময়ে বন্ধুরা মিলে গলা ছেড়ে খালিদের গানগুলো গাওয়া যেন ছিলো সে সময়ের রুটিন ওয়ার্ক।
হ্যাঁ, কলেজ জীবনের আবেগের সাথে শিল্পী খালিদের গানের সম্পর্ক অনেকেই আজ ফেসবুকের পাতায় তুলে ধরেছেন। না ফেরার দেশে চলে যাওয়া খালিদের শূন্যতায় মনের অজান্তেই অনেকে ফিরেছেন কলেজ জীবনের স্মৃতিতে। যেখানে প্রেম-বিরহে অব্যক্ত মনের কথাগুলো অনেকেই খুঁজতেন খালিদের গাওয়া গানের লাইনে লাইনে। হৃদয় জোড়া চাপা কষ্টে কিংবা দুঃখের কোন আবহে কলেজ পড়ুয়া অনেক তরুণ একান্তে কিংবা দলবেঁধে গেয়েছে “যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে এ হৃদয়ে, সে কিছু নয়। শত আঘাতেও নিঃস্ব যে আজ, তার আবার হারানোর ভয়।”
আজ “হয়নি যাবারও বেলা” বলে আমরা খলিদ ভক্তরা আক্ষেপ করলেও প্রিয় শিল্পী তার গানের কথার ছলেই আমাদের ‘হৃদয় পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে হারিয়ে গেল নিমিষেই। কোনো কারণে ফেরানো গেল না তাকে।’
১৯৬৫ সালের ১ আগস্ট গোপালগঞ্জে জন্ম নেন খালিদ আশির দশকে জনপ্রিয় ব্যান্ড চাইমের ভোকালিস্ট হয়ে সঙ্গীতাঙ্গনে প্রবেশ করেন। ‘সরলতার প্রতিমা’, ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘কোনো কারণে ফেরানো গেল না তাকে’, ‘হয়নি যাবারও বেলা’, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’, ‘তুমি নেই তাই’, ‘নাতি খাতি বেলা গেল’, ‘কীর্তনখোলা নদী’ এবং ‘ঘুমাও’– এর মতো বহু জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই শিল্পী।
২০১০ পরবর্তী সময়গুলোতে গানে অনিয়মিত ছিলেন খালিদ। দেশ ছেড়ে পাড়ি জমান নিউইয়র্কে। সম্প্রতি তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। সোমবার রাতে রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসায় বুকে ব্যথা অনুভব করার পরপর সংজ্ঞা হারালে তাকে কমফোর্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জনপ্রিয় শিল্পী খালিদ নিউইয়র্কে থাকতেন এক সন্তান ও স্ত্রী শামীমা জামানসহ।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)