Advertisements
আঁকাবাকা সিড়ি বেয়ে ছাদে ওঠতেই দেখা মিলেছে নজরকাড়া এক ফলের বাগান। আরেকটু সামনে গিয়ে দেখা মিলল ঝুলে থাকা ছোট বড় ড্রাগন। যেন ড্রাগনের ভারে মুহূর্তেই নুয়ে পড়ছে প্রতিটি গাছ। শুরুতে দেখে যে কারোরই মনে হবে এটি একটি বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলা ড্রাগন বাগান। আসলে এটি একটি প্রাথমিক স্কুলের ছাদ বাগান।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের বেবুলা আদিত্যপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদে গড়ে তোলা হয়েছে এই ড্রাগন বাগানটি।
পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রয়াত আতিকুর রহমান আপন ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের ১৪০০ বর্গফুট ছাদে ড্রামে ১০টি ড্রাগন কাটিংয়ের দৃষ্টিনন্দন এ ফলের বাগান শুরু করেন। বর্তমানে এ বাগানে রয়েছে প্রায় ১০০টির মতো গাছ। সবগুলো ড্রাগন গাছেই ফুল ও ফল ঝুলে রয়েছে। এ বাগানের চাষাবাদে গোবর সার, খৈল ছাড়া গাছে অন্য কোনো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। এ বাগান থেকে কাটিং নিয়ে শিক্ষার্থীসহ এলাকার অনেকেই তাদের বাড়িতে চাষ শুরু করেছে ড্রাগনের। বাগানের ড্রাগন ফলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে বাজারেও বিক্রি হচ্ছে অনেক। এছাড়া গরীব শিক্ষার্থীদের খাতা কলেমেও জোগান দিচ্ছে এ ছাদ বাগান থেকে প্রাপ্ত আয়ে।
এলাকাবাসী মনে করেন, এভাবে নতুন প্রজন্মকে শিক্ষার পাশাপাশি চাষাবাদেও আগ্রহী করে তুলছেন শিক্ষকগণ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সালমা বেগম জানান, ২০১৮ সালে তার স্বামী ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক প্রয়াত আতিকুর রহমান আপন স্কুলের ছাদে মাত্র ১৯টি কাটিং দিয়ে বাগান শুরু করেন। তিনি নিজেই বাগানটি দেখাশোনা করতেন। তার মৃত্যুর পর এখন ড্রাগন বাগানটি প্রধান শিক্ষক নিজে দেখাশোনা করেন।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাগানে রয়েছে প্রায় ১০০টির মতো ড্রাগন গাছ। বাগানের ড্রাগন ফলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে বাজারেও বিক্রি হচ্ছে অনেক। এছাড়া গরিব শিক্ষার্থীদের খাতা-কলমও জোগান দিচ্ছে এই ছাদ বাগান।
পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নূর-ই-আলম জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে ২০১৮ সালে ওই স্কুলের ছাদে ১০টি কাটিং দিয়ে ড্রাগন বাগান শুরু করা হয়। বর্তমানে বাগানে ১০০ টি গাছ রয়েছে। এমন আরও বাগান উপজেলায় ছড়িয়ে দেয়ার কাজ করছে উপজেলা কৃষি অফিস।
পাকুন্দিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই বাগানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ইতোমধ্যেই উপজেলার অনেক স্কুলের ছাদে বা মাঠের পাশে বিভিন্ন বাগান শুরু করা হয়েছে।