জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আবারও ভোটের রাজনীতিতে সরব বাংলাদেশ। তিন সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচার-প্রচারণা বিশ্বকাপ ফুটবলের শেষ সময়ে মানুষের নজর কাড়ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিতে পছন্দ করে। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধি জনগণের চাহিদা কতোটুকু পূরণ করতে পারছে বা পারছে না, সেদিকে নজর ও আপত্তির চেয়ে ভোট দিতে পারাটাই জনগণের প্রকাশ্য চাহিদা।
গণতান্ত্রিক শাসনে জন সম্পৃক্ততা সৃষ্টি হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। তাই নির্বাচন হল গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান ধাপ, যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক যাত্রাপথের সূচনা হয়। তবে নির্বাচন হলেই গণতান্ত্রিক যাত্রাপথের সূচনা হয় না। নির্বাচন হতে হয় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হলে সব যোগ্য ভোটার সব ধরণের ভয়-ভীতির ঊধের্ব উঠে বিনা দ্বিধায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। এই বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের তথা নির্বাচন কমিশনের।
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও প্রচলিত ধারায় জনগণ তা মেনেও নিয়েছে বলে ধরা যায়। এই অবস্থার মধ্যে ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের আগে ৩ সিটিতে ভোট ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন: ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজের কারণে কোনোভাবেই এই ৩ সিটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবার মধ্যে সমন্বয়রের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে হবে।’
একইদিনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অন্য একটি প্রেক্ষাপটে বলেছেন, ‘বিএনপি যতই রঙিন খোয়াব দেখুক না কেন, ২০০১ সালের নীল নকশার নির্বাচন বাংলাদেশে আর হবে না।’
সব মিলিয়ে দেশের রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষায় ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না’ ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ভাষায় ‘নীল নকশার নির্বাচন আর হবে না’ আসলে একই অর্থ বহন করে। আমরা বিশ্বাস করি যে তারা আসলে জনগণের মনের কথাই বলেছেন। দেশের জনগণও কোনো ধরণের প্রশ্নবিদ্ধ ও নীল নকশার নির্বাচন চায় না। কোনো কারণে এর ব্যতিক্রম হলে তা দীর্ঘমেয়াদী গণতান্ত্রিক ধারার জন্য ইতিবাচক কিছু হবে না বলে আমাদের বিশ্বাস। জনগণের মতামত সঠিকভাবে প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়া রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব, সে দায়িত্ব পালনে যারা নিযুক্ত আছেন তাদের উচিত বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখে ব্যবস্থা নেয়া।