কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিচার, আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে খোঁজ নিয়ে এই তথ্য জানা গেছে।
কোটা সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দেয় ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’।
জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিচার ও আটককৃতদের মুক্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৪টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য তারা এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন বলে জানিয়েছেন।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে প্রায় চারদিন ধরে। বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমানের মুক্তির দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রেখেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে গত বুধবার বিভাগের কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ ও ক্লাস চলাকালীন অবস্থান কর্মসূচি করার ঘোষণা দেন তারা। এছাড়াও অনুষদের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ, শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগ (মাস্টার্স), উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগে (চতুর্থ বর্ষ) ক্লাস বন্ধ রয়েছে।
কলা অনুষদভুক্ত বাংলা বিভাগ, আরবি সাহিত্য বিভাগ, আইন অনুষদভুক্ত আইন বিভাগে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে প্রায় দশদিন ধরে। বিভাগুলোতে একাধিকবার ক্লাসে বসার ঘোষণা দিলেও কোনো ক্লাস হয়নি।
জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ; ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস ও ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদভুক্ত দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও সমাজকল্যাণ ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমাদের বন্ধু মশিউরকে কোটা সংষ্কার আন্দোলনে যুক্ত থাকার অপরাধে ছাত্রলীগ হল থেকে ধরে নিয়ে গেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনার কিছুই জানে না। প্রশাসন অভিভাবকের মতো আচরণ করছে না। অন্যায়ভাবে তাকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা চাই মশিউরকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক। তা না হলে আমরা ক্লাসে ফিরবো না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, আমি যতটুকু জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগেই ক্লাস হয়েছে। তবে যে বিভাগগুলোতে ক্লাস হয়নি সেসব বিভাগের শিক্ষার্থীদের বলবো দাবি দাওয়া থাকলে বিভাগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে উত্থাপন করবেন। আমরা বসে সেটার সমাধান করবো। ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। এতে শিক্ষার্থীরাই পিছিয়ে পড়বে।