কানে শোনেন না, কথাও বলতে পারেন না। বোলিং করেন দুর্দান্ত। গতির সঙ্গে আছে প্রায় সবধরনের ভ্যারিয়েশন। বলছি সিলেটের তরুণ পেসার আকসার আহমেদের কথা। জন্মগতভাবে বাকপ্রতিবন্ধী ক্রিকেটারের বোলিং নৈপুণ্য চোখে পড়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স কর্তৃপক্ষের। বিপিএলের অনুশীলন ক্যাম্পে ২৩ বছর বয়সী আকসারকে রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
ঢাকার একটি একাডেমিতে ক্রিকেট চর্চা করে চলা আকসারের গল্পটা প্রকাশ্যে আসে বেসরকারি এক টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনের পর। দ্বিতীয় বিভাগ লিগে খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই ৫ উইকেট পাওয়া পেসার কোচ-অধিনায়কের ইশারা অনুসরণ করে সব বাধা পেরিয়ে হাঁটছেন স্বপ্নজয়ের পথে।
বিপিএলে অনুশীলনের নেটে সুযোগই নয়, সামনের একবছর আকসারকে আর্থিক সহায়তাও দেবে চ্যালেঞ্জার্স কর্তৃপক্ষ। উদ্যোগের খবরটি জানাতে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে দলটি। ছিলেন দলটির দুই ক্রিকেটার সাব্বির রহমান ও নাঈম ইসলাম।
চ্যালেঞ্জার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম রিফাতউজ্জামান বললেন, ‘আজকের যে সংবাদ সম্মেলন সেটি আকসারকে কেন্দ্র করে। প্রতিশ্রুতিশীল একজন বোলার সে। ধারাবাহিকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি এরকম অনেকেই কিন্তু সারা বাংলাদেশে উন্নতি করছে, নিজেদের তৈরি করছে। আরেকটু বেশি করতে পারবে যদি পেশাদার ক্রিকেটারদের আরেকটু কাছে আসার সুযোগ পায়।’
‘এমন না যে শুধুই খেলার সুযোগ কিংবা অনুশীলনের সুযোগ, এছাড়াও যদি আমাদের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিরা আর্থিকভাবে খেলার জন্য সহায়তা করতে পারে। প্রতিনিয়ত একটা খেলোয়াড়ের ধরাবাঁধা কিছু খরচ থাকে। সেগুলোর সাথে যদি পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয়টা নিশ্চিত করা যায়, এরকম যদি কিছু কিছু করে, সেই জায়গা নিয়ে অন্যরাও এগিয়ে আসে। এটিই প্রথম উদাহরণ। এটা করেছি একান্তই নিজেদের পর্যবেক্ষণ থেকে যে শুরুটা অন্তত হওয়া উচিত।’
দলটির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ ইয়াসির আলম বললেন, ‘আমরা শুরু করছি আকসারকে নিয়েই। ওর যথাযথ পুষ্টির জন্য পরবর্তী একবছর সহায়তা করব, যেন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। ওকে নিয়ে কাজ শুরুর কারণ হল, ওর প্রতিবন্ধকতা দিয়ে শুরু। কথা বলতে পারে না, কথা শুনতেও পারে না। কিন্তু যদি ওর প্র্যাকটিস দেখেন, বোলিং দেখেন, ডিভিশন ক্রিকেটে অনেকগুলো ম্যাচও খেলেছে।’
‘আমরা সামনের বছরে আরও কিছু ছেলে খুঁজব, বোলার হতে পারে, ব্যাটসম্যান হতে পারে। তারা যেন উৎসাহী হয়, আমাদের ভবিষ্যৎ ক্রিকেটাররা যেন বুঝতে পারে একজন এত প্রতিবন্ধকতা নিয়েও এতদূর আগাতে পারে। যদি ভবিষ্যৎ ক্রিকেটের জন্য দশজন মিলে চেষ্টা করি, সেখান থেকে জাতীয় দলে দুজন বের হলেই হয়। আমরা ভবিষ্যতে একটা একটা করে আরও অবদান রাখব।’
‘আকসারের প্রতিভা দেখে আমরা অবাক। বিপিএলের ড্রাফটে থাকলে আমরা তাকে নিয়ে নিতাম। তবে ক্যাম্পে থাকবে কোচের সঙ্গে থাকবে, যতটুকু স্কিল নেয়া যায়।’