পৃথিবী থেকে মাত্র ৪০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকা পৃথিবীর মতো সাতটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, এই পৃথিবী সদৃশ গ্রহগুলো ট্রপিস্ট-১ নক্ষত্রের চারপাশে ঘুরছে।
এসব গ্রহে ভূ-পৃষ্ঠে জীবন ধারণের অন্যতম উপাদান পানি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে নাসা।
গ্রহগুলোর মধ্যে অন্তত তিনটিতে প্রাণীর বেঁচে থাকার সহায়ক পরিবেশ রয়েছে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই-ই নয়, ওই তিনটি গ্রহে ইতিমধ্যে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে বলে তারা অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছেন।
এসব গ্রহে প্রাণ আছে কি না তা জানতে প্রায় এক দশকের মতো সময় লাগবে উল্লেখ করে বিজ্ঞানীরা বলেন, এটা একটি বিশাল পদক্ষেপের শুরু মাত্র।
এর আগে কখনো পৃথিবীর মতো গ্রহ নিয়ে ঘুরতে থাকা নক্ষত্রের আবিষ্কার হয়নি। ট্রপিস্ট-১ এর গ্রহগুলোর উপরিভাগ পৃথিবীর মতো শক্ত পদার্থ দিয়ে তৈরি। যেগুলোর আকার আমাদের পৃথিবীর মতোই। এই গ্রহগুলোর মধ্যে ছয়টি গ্রহের তাপমাত্রা ০ ডিগ্রি থেকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। যা সেখানে প্রাণীর জন্ম লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত অবস্থা।
এই আবিষ্কার নিয়ে নাসা তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা ভিডিও প্রতিবেদনে বলেছে, গ্রহগুলোতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা খুবই বেশি। দীর্ঘ ২১ দিন ধরে তাদের স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে নতুন আবিষ্কৃত এই গ্রহগুলোর নক্ষত্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান অবস্থাকে পরিমাপ করা হয়েছে।
স্পিটজারের সাহায্যে সাতটি শক্ত ভূ-পৃষ্ঠ থাকা গ্রহ শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে প্রাণীর বসবাসের জন্য উপযোগী পরিবেশের উপস্থিতি রয়েছে, যেখানে পানির সন্ধানও পাওয়া যেতে পারে।
বেলজিয়ামের লিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোর্তিবিজ্ঞানী মাইকেল গিলন বলেছেন, জীবনের অস্তিত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন সাতটি গ্রহ এখন আমরা পেয়েছি যা নিয়ে আমরা আরও গবেষণা করতে পারবো, এবং এখন আমরা এটিই করছি। সামনের দিনগুলোতে মানুষ এই গ্রহগুলো সম্পর্কে আরও নতুন নতুন তথ্য পাবে।
টেলিস্কোপের সাহায্যে ট্রানজিট পদ্ধতিতে দেখা গেছে আবিষ্কৃত গ্রহগুলো ১বি-১এইচ ক্যাটাগরির। নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘোরার সময় গ্রহগুলো নক্ষত্রের উজ্জ্বলতাকে একটু কমিয়ে দেয়। এ থেকেই গ্রহগুলো সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
২০১৮ সালে মহাকাশে আরও শক্তিশালী জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ পাঠাবে নাসা। এর সাহায্যে নতুন এই গ্রহগুলোর খুঁটিনাটি তথ্য জানা যাবে।
এই আবিষ্কার নিয়ে দেখুন নাসার একটি ছোট্ট ভিডিও-