শুধু জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কিংবা পাসের হার বাড়লেই শিক্ষার উন্নয়ন বোঝায় না। শিক্ষার গুণগত মানে পৌঁছানোই হচ্ছে প্রকৃত শিক্ষা। এমন মন্তব্য করে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদার বলেছেন, পাসের হার নিয়ে হতাশ না হয়ে শিক্ষার মূল সমস্যা সমাধানে সবার কাজ করা উচিত।
গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করে আসা অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদার এইচএসসি পরীক্ষার এই ফলকে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বলে মনে করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেখানেও পাসের হার এর চেয়ে খুব একটা বেশি নয়।
মিশিগান ইউনিভার্সিটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যপক ও চেয়ারম্যান কামরুল হাসান মজুমদার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এইচএসসি লেভেলের যে সিস্টেম ও তাদের যে সম্পদ আছে সে অনুযায়ী ৬৫ শতাংশ গ্রেজুয়েটকে ভালো পরিমাণ মনে করা হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ গ্রেজুয়েটের হার অনেক বেশি স্ফীতি। কারণ হাইস্কুল থেকে বিপুল হারে পাস করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস করে মাত্র ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী।
তিনি আরো বলেন, এই ফলাফল বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশের শিক্ষার অব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা প্রয়োজন। যোগ্য শিক্ষক, অবকাঠামোসহ নানা দিকে উন্নয়ন করা প্রয়োজন। তার মতে, এইচএসসি লেভেলে পাশের হার ৭৫ শতাংশও অনেক বেশি। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী যেনো পড়তে যেতে পারে সেই ব্যববস্থা করা উচিৎ। স্কুলগুলোতে ভালো শিক্ষক, বেশি বেশি কম্পিউটার ও অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।
গত কয়েক বছরের উদাহরণ টেনে এই শিক্ষক বলেন, এর আগে পাসের হার অনেক বেশি থাকলেও সেই সময়ে পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র দু’জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। আর এসব কারণেই পাসের হারকে একমাত্র লক্ষ্যমাত্রা না ধরে শিক্ষার মান বাড়াতে উদ্যোগ নিওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এইচএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ। আর গতবারের চেয়ে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ২৩ হাজার ৬৮ জন। পাসের হার আর জিপিএ প্রাপ্তি-দুই জায়গাতেই ধাক্কা খাওয়ায় মন্ত্রণালয় বলছে, ফলাফল এবার খারাপ হয়েছে।