ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের তীব্রতা বাড়তে থাকায় ন্যাটো পূর্ব ইউরোপে বড় ধরনের সামরিক উপস্থিতির অনুমোদন দেবে বলে জানিয়েছেন জোটের মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ। তবে রাশিয়া ন্যাটোকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে, এই যুদ্ধে অংশ নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটো জোটের মহাসচিব জেমস স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়ায় আরও সেনা মোতায়েন করা হবে।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় বৈঠকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশগুলোতে চারটি নতুন ন্যাটো সামরিক ইউনিট মোতায়েনের বিষয়ে বৈঠকে ন্যাটো নেতারা মতৈক্যে পৌঁছবেন বলেও জানান স্টলটেনবার্গ।
এছাড়াও, ইউক্রেইনকে আরও সমর্থন-সহযোগিতা দেওয়া নিয়েও ন্যাটো নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন। এর মধ্যে ইউক্রেনকে রাশিয়ার রাসায়নিক, জীবাণু এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার থেকে ভালভাবে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করার বিষয়টিও থাকছে।
ন্যাটোরএসব পদক্ষেপের মধ্যে ক্রেমলিন জানিয়েছে, নিজেদের সার্বভৌমত্ব এবং অস্তিত্বের জন্য হুমকি এমন যেকোনো পদক্ষেপ মোকাবেলায় রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য ও পরিকল্পনা অনুযায়ীই চলছে। যদি ন্যাটো এই যুদ্ধে জড়ায় তবে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে বলেও উল্লেখ করেন পেসকভ।
জি-২০ থেকে রাশিয়াকে বাদ দিতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো সম্ভাব্য পদক্ষেপের কথা চিন্তা করছে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ায় হতে যাওয়া জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে, যোগ দিতে চান জানিয়েছেন জাকার্তায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত।
পশ্চিমাদের হুমকি অগ্রাহ্য করেই ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা আরো জোরদার করেছে রুশ সেনারা। কিয়েভ, খারকিভ, সুমি, খেরসনসহ অন্যান্য শহরে চলছে তীব্র লড়াই।
যুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ইউক্রেনের দক্ষিণের বন্দরনগরী মারিউপোলে। কয়েক সপ্তাহ অবরুদ্ধ করে রাখার পাশাপাশি শহরটি ব্যাপক গোলাবর্ষণের শিকার হয়েছে। এখন পর্যন্ত শহরটির পতন প্রতিহত করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, মারিউপোল শহরে এখনও ১ লাখ বেসামরিক রয়ে গেছে। শহরটি প্রায় পুরোটাই ধ্বংসপ্রাপ্ত। অথচ যুদ্ধ শুরুর আগে শহরটির বাসিন্দা ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার। আটকে পড়া বাসিন্দারা মরিয়া হয়ে খাবার এবং অন্য সরঞ্জাম সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হচ্ছে।
রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজের এক মুখপাত্র বলেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের স্কুল, হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে যুদ্ধাপরাধের শামিল এবং আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী।