ওয়ানডে সিরিজের পর এবার শুরু হচ্ছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ও সফরকারী বাংলাদেশের মধ্যকার তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজ। হ্যামিল্টনে সিরিজের প্রথম ম্যাচ শুরু হবে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায়।
খেলাটা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে। সবুজ উইকেটে। গতি আর সুইংয়ে পারদর্শী নিউজিল্যান্ড পেস বোলাররা। এমন কন্ডিশনে টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ বরাবরই ভুগেছে। তার ওপর হ্যামিল্টন টেস্টে নেই দলের সেরা দুই তারকা সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। ইনজুরিতে পড়েছেন দুজনেই।
বাংলাদেশ দলের টপঅর্ডার ব্যাটিংও চলতি সফরে স্বস্তি দেয়নি। টেস্ট সিরিজের জন্য পেস বোলিং বিভাগে মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়া বাকিরা প্রায় নতুন।
নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের জন্য কি অপেক্ষা করছে সেটা বাকিদের মতো অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহরও বেশ ভালোভাবে জানা। আর এসব পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটারদের জন্য সেটাও নতুন কিছু নয়। দরকার শুধু প্রায়োগিক ক্ষমতা ও সক্ষমতার যোগ। সেই কাজটা করতে হয় আসল জায়গায়-খেলার মাঠেই।
ম্যাচের আগে তেমনটাই জানিয়েছেন সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্ব করা মাহমুদউল্লাহ। সাকিব ও মুশফিকের চোটের কারণে না থাকাকে বড় ক্ষতি বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘সাকিব-মুশফিকের দলে না থাকা অনেক বড় ক্ষতি। তারা আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু যারা তাদের পরিবর্তে দলে সুযোগ পাবেন, তাদেরকেও দু’হাত ভরে অভিজ্ঞতা নিতে হবে ও নিজেদের প্রমাণ করতে হবে।’
তার আরো সংযোজন, ‘আমি আশাবাদী পেস বোলিংয়ে আমরা ভালো করব। খালেদ আহমেদ ভালো করবে সেই আশায় আছি। আবু জায়েদ রাহী আমাদের দলের প্রিমিয়ার পেস বোলার। কয়েকটা ম্যাচ খেলেছে সে। পারফর্মও করেছে। এবাদত নতুন প্রতিভা। ভালো গতি আছে তার। আর মোস্তাফিজের দক্ষতা সম্পর্কে সবাই জানে।’
রিয়াদ বলেন, ‘সার্বিকভাবে আমি দলে পেস বোলিং নিয়েও বেশ উৎসাহিত। তবে মাঠে গিয়ে দেখতে হবে কে কেমন পারফরম্যান্স করে। এটাই হল আসল বিষয়।’
দেশের বাইরে চ্যালেঞ্জ কতটা সেই প্রসঙ্গ তুলে মাহমুদউল্লাহর মন্তব্য, ‘বিদেশের মাটিতে কেমন পারফরমেন্স করছি সেই ব্যাপারে নিজেদের কাছেই আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ থাকে। এসব জায়গায় আমরা টেস্ট ম্যাচ জিততে পারব কি পারব না-এই বিষয়ে সবার মধ্যে একটা সংশয় থাকে। তবে দলের অধিনায়ক এবং খেলোয়াড় হিসেবে আমি বলতে পারি সেসব সংশয়ের কোনো বিষয় এই সফরে আমাদের মধ্যে নেই। পেছনের সময় থেকে আমরা অনুপ্রেরণা নিয়েই এই সিরিজে খেলতে নামব।’
বেশি কমের কোনো বিষয় নেই, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে চায় বাংলাদেশ, ‘আমরা আমাদের শক্তিমত্তা অনুযায়ী খেলতে চাই। ওদের আক্রমণ সম্পর্কেও আমাদের ভালো ধারণা আছে। কোন বোলার কি রকম করতে পারে, সেটা জেনেই আমরা এই সিরিজে খেলতে নামছি। এখন নিজেদের দক্ষতা আমরা এসব ক্ষেত্রে কীভাবে প্রয়োগ করতে পারি সেটার উপরই অনেককিছু নির্ভর করছে। আমরা জানি এখানকার কন্ডিশন কঠিন হবে। উইকেটে ঘাস থাকবে। বল সুইং হবে বেশ। এসব বিষয় আগেই জেনে আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি। এখন দেখার বিষয় মাঠে আমরা নিজেদেরকে কিভাবে দ্রত মানিয়ে নিতে পারি এবং পারফর্ম করতে পারি।’
সাকিবের ইনজুরি নিয়ে মাহমাদুউল্লাহ বলেন, ‘সবাই জানি সাকিব কতটা গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় আমাদের দলে। সে চোটে পড়া মানে দলের জন্য বড় এক ধাক্কা। সবাই জানি তার সামর্থ্য সম্পর্কে। সে থাকলে দলের ভারসাম্য অনেক ভালো থাকে, না থাকলে কিছুটা গড়-মিল হয়।’
সাকিব তো আর সারা জীবন খেলবেন না। সময়ের সঙ্গে একটা সময় তাকে অবসর নিতে হবে। তেমননি ভাবে মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহও চলে যাবেন। তখন কি হবে এ দেশের ক্রিকেটের? এ প্রশ্নও তুলে ধরা হয় মাহমুদউল্লাহর কাছে।
জবাবে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘সাকিবের অনুপস্থিতিকে কাজে লাগাতে হবে। বড় শূন্যতা কীভাবে পূরণ করতে হয়, সেটি শিখতে হবে এ সফর থেকে, ‘যেটা বিশ্বাস করি ও সতীর্থদের বলি, এটা আমাদের জন্য বড় সুযোগও। সুযোগটা কীভাবে নিতে পারি, সেটাই চিন্তা করা উচিত। একটা সময় আমরা অনেকেই থাকব না, অবসরে যেতে হবে। তখন এটাই সহায়তা করবে (শূন্যস্থান পূরণের অভ্যাস)। তারা ওই দায়িত্ব নিয়ে যেন ভালো করতে পারে। এটা দলের জন্য যেমন, নিজেদের জন্যও ভালো।’