আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকের (প্রবাসীসহ) জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার চিন্তা করছে সরকার। শিগগিরই এ ব্যাপারে আইন ও বিধি প্রণয়ন এবং আলাদা একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেনশন বিষয়ক ঘোষণা দেওয়ার পরেই এই উদ্যোগ বাস্তবের মুখ দেখছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে জাতীয়ভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার ব্যাপারে নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ।
দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। একান্নবর্তী পরিবারব্যবস্থা ক্রমেই বিলুপ্তির পথে। এমন বাস্তবতায় বার্ধক্যের দুর্দশা এড়াতে শক্তিশালী পেনশন–ব্যবস্থা জরুরি হয়ে উঠেছে।
এছাড়া বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে এবং নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে দ্বৈত উত্তরণের সময়ে আছে। এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার প্রয়োজন আছে। উন্নত সামাজিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ জীবনের জন্য নাগরিকদের প্রত্যাশা বাড়ছে। সার্বিক বিবেচনায় পেনশন ব্যবস্থা দারুণ ইতিবাচক একটি উদ্যোগ।
পেনশন ব্যবস্থার পদ্ধতি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী সরকারের পরিকল্পনা জানিয়েছেন। পেনশন ব্যবস্থার আওতায় গঠিত তহবিলে যারা যে পরিমাণ চাঁদা দেবেন, ওই তহবিলে একই পরিমাণ চাঁদা সরকারও দেবে। এটি ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। পেনশন তহবিল বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করবে এই কর্তৃপক্ষ। বিনিয়োগ থেকে যে মুনাফা আসবে, তা পেনশনধারীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেভাবে পেনশন কার্যক্রম চালায়, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা বাস্তবায়নে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা দরকার। সেইসঙ্গে দেশের মানুষের সামর্থ্য এবং প্রয়োজনকেও মাথায় রাখা খুবই জরুরি। যাতে করে সরকারের গৃহিত এই পদক্ষেপ সত্যই মানুষের কল্যাণে আসে।