প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তে অথবা ব্যবসা বাণিজ্যে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ত্রিপুরার সাথে ফেনী মৈত্রী সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বন্দর নয়, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ব্যবহার করতে পারবে ত্রিপুরা। ১০ বছর আগে দেখা স্বপ্নের সেতু এখন একটি বাস্তবতা। এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বিত স্বার্থ অর্জনে সহযোগিতা করার একটি অংশ এই সেতু উদ্বোধন।
তিনি আরও যোগ করেন, বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এখন একটি উর্বর জায়গা। এই সেতু কেবলমাত্র ভারত নয় বরং নেপাল ও ভুটানের মধ্যেও সংযোগ ও বাণিজ্য স্থাপনে সহায়তা করবে।
ইতিহাস স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে ভারত তাদের বর্ডার বাংলাদেশের জন্য খুলে দেয়। এই সেতু শুধু সেতুবন্ধন নয়, ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রভাব রাখবে। ১৯৭১ সালে কিভাবে আমার জনগণকে আপনারা আশ্রয় দিয়েছিলেন সেটা আমরা ভুলিনি। ভারত বাংলাদেশ বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী হোক।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল উদ্বোধন আয়োজনে উপস্থিত হয়ে বলেন, এই সেতুর মাধ্যমে আমাদের মৈত্রীকে আরো জোরদার করা হলো। বিগত কিছু বছরে রেল, পানি ইত্যাদি নিয়ে যেসব চুক্তি ছিলো এই সেতুর মাধ্যমে তা আরও জোরদার হলো।
তিনি আরও করেন, ভারতেই শুধু নয় বাংলাদেশেও এই সেতুর মাধ্যমে উন্নয়ন হবে ও কানেক্টিভিটি বাড়বে। পর্যটন বিস্তৃত হবে। যেকোনো আমদানি রপ্তানিতে এখন শুধু সড়ক বিভাগের উপর এখন নির্ভরশীল থাকতে হবে না।
তিনি বলেন, সেখানে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট বানানোর কাজও শুরু হয়ে গেছে। আগরতলা ভারতের সবচেয়ে কাছের শহর হয়ে যাবে। ত্রিপুরার কৃষকরা তাদের পণ্য বাইরে পাঠাতে পারবে। নিজেদের উৎপাদিত পণ্য তারা বিদেশে রপ্তানি করবে।
প্রায় দু’কিলোমিটার লম্বা এই সেতুটি নির্মাণ করেছে ভারতের একটি সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড এনএইচআইডিসিএল। ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনএইচআইডিসিএল প্রায় ১৩৩ কোটি রুপি খরচ করে এই ব্রিজটি বানিয়েছে। সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর। সেতুর একপ্রান্তে দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুম শহর, অন্যপ্রান্তে বাংলাদেশের রামগড়। সেতুটি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে সহজ অ্যাকসেসের মাধ্যমে এটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ছবিটাই আমূল বদলে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।