রূপসা নদী ও ভৈরব নদে লবণাক্ততার পরিমাণ ক্রমেই মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর ক্ষতিকর প্রভাবের কবলে পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, জলজ প্রাণী, গাছপালা ও পরিবেশ ।
পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছেন, এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাটির তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে দক্ষিণাঞ্চল।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত বছর এপ্রিল মাসে খুলনার ভৈরব নদ ও রূপসা নদীর কয়েকটি পয়েন্টে লবণাক্ততা ছিল ১৪ থেকে ১৬ পিপিটি ।
এ বছর মে মাসে যা ১৮ পিপিটি ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণে দক্ষিণের নদী সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলগুলো পড়েছে ভয়াবহ লবণের আগ্রাসনে।
খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের জুনিয়র কেমিস্ট এস এম শরিফুর রহমান, গত বছরের তুলনায় এবার ৩ পিপিটি লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের আশংকা, নদীপাড়ের মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল মাছ, কাঁকরা সহ সব জলজ প্রানীর অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে । আর এই জলজ প্রানীর উপর নির্ভরশীল পাখিও করছে স্থান পরিবর্তন । প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরি বলেন, লবনাক্ত পানি মিঠা পানি থেকে অনেক বেশি তাপমাত্রা ধারণ করতে পারে। তাই যেসকল জলজ প্রাণী বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারেনা তারা মারা যাচ্ছে।
লবণাক্ততার প্রভাবে জলজ মৎস্য সম্পদের প্রজনন ও খাদ্যশৃংখল ব্যহত হবে বলে আশংকা পরিবেশ অধিদপ্তরের ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডক্টর মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, যখন তাপ ও লবণাক্ততা দুটোই একসাথে বেড়ে যায় তখন তা গাছের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। লবণাক্ত পানিতে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে মাছের প্রজননও হুমকির মুখে পড়ে।
পোল্ডারাইজেশনের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা মূলত এই অঞ্চলের লবনাক্ততা বৃদ্ধির মূল কারণ মনে করেন পরিবেশবিদ।