ফেনী সদরের লেমু ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপুর গ্রামের মরহুম নুরুল ইসলমের পুত্র নুর নবী জীবিকার সন্ধানে ১৯৯৫ সালে কক্সবাজার আসেন। প্রথমে বিভিন্ন রকমের কাজ করলেও পরে বিচ ফটোগ্রাফিকে পেশা হিসেবে নেন তিনি। দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে সুখেই সংসার কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু ২০১৩ সালের দিকে তার জীবনে নেমে আসে চরম দুর্যোগ। টেকনাফ থেকে বন্ধুদের ট্রলারে তুলে দিতে গিয়ে মুখোমুখি হন নিদারুণ যন্ত্রণাকর এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির।
জীবনের ওইসব রোমহর্ষক স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন নুর নবী। সাগর ভ্রমণের সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে নবী বলেন, সাগরে ২৫ দিন অনাহারে ভাসার কথা।
আরো ভয়াবহ তথ্য দিয়ে তিনি জানান, দালালদের সঙ্গে বাড়াবাড়ি করায় তার চোখের সামনে ছয় যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে অর্থ উপার্জনের জন্য দালালদের প্রতারণার শিকার হয়েও অনেককেই সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়াগামি নৌযানে উঠতে হচ্ছে।
ভাগ্যবদলের জন্য বা প্রতারণার শিকার হয়ে যারা সাগর পথে মালয়েশিয়াতে যাচ্ছেন, অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে তাদের। সাগর ভ্রমণের পথে অনেকেই মৃত্যুর ভয়াল দর্শন পাচ্ছেন প্রতিক্ষণেই। দালালদের নির্মম আচরণে দীর্ঘ এক বছর জেল খেটে নুর নবী রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় গত বছরের ১০ নভেম্বর দেশে ফিরে আসেন।
এখন আবার সৈকতে আলোকচিত্রীর কাজ করেন তিনি। কেউ যেনো আর সাগর পথে মালয়েশিয়া না যায়, এটাই সকলের প্রতি তার আকুল আবেদন।