সাম্প্রতিক সময়ে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রার সঙ্গে স্ট্রবেরি গ্রহণের প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষণায় জানা যায় স্ট্রবেরি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি এই ফল মিষ্টির প্রতি টান কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
চিকিৎসক ডায়াবেটিস রোগীদের সাধারণত মিষ্টি ফল থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই অধিকাংশ রোগীর জন্য রসনা তৃপ্তির পথ হয়ে ওঠে কঠিন। এই সমস্যার সমাধান হতে পারে স্ট্রবেরি। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, স্ট্রবেরি হতে পারে এমন একটি সুপারফুড, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মিষ্টির লোভ মেটাতেও সহায়তা করতে পারে।
‘ফুড অ্যান্ড ফাংশন’ নামক একটি বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণায়, গবেষকরা ১৪ জন অংশগ্রহণকারীদের তিনটি পৃথক বিরতিতে একটি স্ট্রবেরির তৈরি পানীয় পান করতে বলেছিলেন। দেখা গেছে ,যারা তাদের খাবারের পাশাপাশি এটি পান করেছেন, তাদের তুলনায় যারা খাবারের দু’ঘণ্টা আগে স্ট্রবেরির পানীয় গ্রহণ করেন তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা উল্লেখযোগ্য ভাবে কম ছিল প্রায় দশ ঘণ্টা ধরে।
গবেষকদের ধারণা, স্ট্রবেরি ইনসুলিন সঙ্কেতকে উন্নত করে। তা রক্ত প্রবাহ থেকে শর্করাকে বার করে এবং কোষ পাঠিয়ে দেয়। সেখানে এটি শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
এছাড়া ‘উইমেনস হেলথ স্টাডি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যে সব নারী প্রতি সপ্তাহে দু’বারের বেশি স্ট্রবেরি খান, তাদের তুলনায় স্ট্রবেরি না খাওয়া নারীদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ১০ শতাংশ কম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রবেরি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও পলিফেনল সমৃদ্ধ। যা এই রোগের সঙ্গে লড়াই করতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বেশি অ্যান্থোসায়ানিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে।
স্ট্রবেরি ভিটামিন সি এবং ম্যাগনেশিয়ামে পরিপূর্ণ। ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ খাবার ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা কমাতে সাহায্য করে। ম্যাগনেশিয়াম ইনসুলিনের সমস্যা কমায়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
স্ট্রবেরি ফাইবারের ভাল উৎস যা শর্করার শোষণকে ধীর করে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকে।
তবে কোনও খাবারই অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। রক্তে শর্করার মাত্রা একেবারে কমিয়ে দেবে এমন কোনও নির্দিষ্ট খাবার নেই। বিশেষ খাবারে উপস্থিত সার্বিক কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্ট্রবেরির ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’ কম। তার মানে এই নয় যে, এটি যথেচ্ছ পরিমাণে সেবন করা যায়। পুষ্টিবিদরা মনে করেন, ৪ থেকে ৫টি বেরি সকাল বা সন্ধ্যায় হালকা খাবার হিসাবে খাওয়াই ভাল।