ইতালিয়ান নাগরিক টাভেলা সিজার হত্যাকাণ্ডে আইএস জড়িত নয় বলে বাংলাদেশ যে ধারণা করছে তার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছে ইতালির দূতাবাস। বুধবার সচিবালয়ে ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিয়ো পালমার সঙ্গে বেঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
গত সোমবার ইতালির নাগরিক টাভেলা সিজারকে গুলি করে হত্যার পর আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ।
ইতালির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
তদন্তের অগ্রগতির ব্যাপারে তিনি বলেন, “ঘটনার মাত্র দু-একদিন হলো। এখনই সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আশা করছেন শিগগিরই একটি জায়গায় পৌঁছতে পারবো।”
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এই ঘটনার পরপর দ্রুত কাজ শুরু করায় ইতালিয়ান দূত প্রশংসা করেছেন। ওনারা কিছু সন্দেহের কথা বলেছেন। আমাদের কিছু সন্দেহ আছে। তিনি কিছু সন্দেহের সঙ্গে একমত হয়েছেন। এ নিয়ে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনী কাজ করছে।
কী ধরনের সন্দেহের কথা বলেছেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু টাভেলা সিজার এনজিও কর্মকর্তা ছিলেন, এ জন্য কারও সঙ্গে বিরোধ থাকতে পারে কিংবা অন্য কারণও থাকতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, উনি যেহেতু এনজিওতে চাকরি করতেন সেখানে পেশাগত কোনো বিরোধ আছে কিনা বা অন্য কোনো বিরোধ আছে কিনা এটা তারাও খতিয়ে দেখছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। আমরা সব দিক বিবেচনা করে অগ্রসর হচ্ছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ইতালীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলাপ হয়েছে। অনেকগুলো সন্দেহ উনারা আমাদের জানিয়েছেন, আমরাও বলেছি। আমাদের কথার সঙ্গে তিনি একমত ছিলেন।”
ইতালিও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আইএসের সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে তারাও জানিয়েছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও আইএসের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়নি।
তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ওই এলাকার কিছু ভিডিও ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি। তবে ভিডিও ফুটেজগুলো স্পষ্ট নয়। ঘটনার সময় সন্ধ্যা সোয়া ৬টা থেকে সাড়ে ৬টা। ওই সময় আলো আঁধারির খেলা থাকে। সিটি করপোরেশনের সবগুলো বাতি তখনও সক্রিয় ছিলো না।
কয়েকটি দেশের দূতাবাস বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের জন্য যে সতর্কতা জারি করেছে, তা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দূতাবাসে রেড অ্যালার্ট জারি আমাদের কাছে অনাকাংক্ষিত। এ ধরনের কেনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
তারপরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রতি ‘বিশেষ নজর দিতে সব জেলার পুলিশ সুপার, ডিআইজি ও পুলিশ কমিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।