টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধর্ষণের শিকার ১২ বছর বয়সী এক কিশোরী কন্যা সন্তানের জম্ম দিয়েছে। গণধর্ষণের শিকার হওয়ার ১০ মাস পর বুধবার সকালে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে সন্তান প্রসব করে সে।
তবে সদ্য ভূমিষ্ট শিশুটির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে ধর্ষণ মামলায় ৪ জন কারাগারে থাকলেও সন্তানের পিতৃপরিচয় ও ভরণ পোষণ নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
জানা গেছে, পিতৃহীন ওই কিশোরীর মা মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। অন্যের বাড়ীতে গৃহকর্মীর কাজ আর ছোট ছেলের দোকান কর্মচারীর সামান্য টাকায় কোনোরকমে চলে তাদের সংসার। দারিদ্রতার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণীতেই বন্ধ হয়ে যায় পড়াশুনা। বাড়ীর কাজকর্ম দেখাশুনা করেই কেটে যাচ্ছিলো সময়।
এর মাঝে গত দশ মাস আগে তার জীবনে নেমে আসে আরেক ভয়ানক দুর্যোগ। গোসল শেষে কাপড় পাল্টানোর সময় গোপনে তার ছবি মোবাইলে ধারণ করে রুদ্র পাল নামের এক প্রতিবেশি। রুদ্র সেই ছবি টাকার বিনিময়ে আরেক প্রতিবেশী মিঠুন পাল ও বসন্ত পালকে দেয়। পরে মিঠুন পাল ও বসন্ত পাল ওই নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলে তাকে জিম্মি করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। সেই সাথে বিষয়টি গোপন না রাখলে তার ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
এ ঘটনার ১৫ দিন পর আবারও একই কায়দায় ওই দু’জনের কাছে ধর্ষণের শিকার হয় সে। দুইমাস পরে আপন চাচা বিষয়টি জেনে গিয়ে কৌশলে ডেকে নিয়ে আবার ধর্ষণ করে তাকে। একই কায়দায় হুমকি দিলে দীর্ঘ ৮ মাস বিষয়টি গোপন রাখে কিশোরী।
দুই মাস আগে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা শেষে জানায় সে আট মাসের গর্ভবতী। পরে সে বিস্তারিত পরিবারকে জানালে ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে মিঠুন পালকে প্রধান আসামি করে কালিহাতি থানায় ৪ জনের নামে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
পরে পুলিশ তাদের ৪ জনকেই গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়।
গতকাল বুধবার সকালে প্রসব ব্যথা শুরু হলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় ওই কিশোরী।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল শিশু বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহমিনা সুলতানা শিশুটির শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়েছন।
অন্যদিকে অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর পিতৃপরিচয় ও ধর্ষণের বিচার নিয়ে শঙ্কিত তারা।