গুঞ্জনটা কয়েকদিন আগে থেকেই ছিল। এবার তা প্রকাশ্যে এলো। সাকিব-তামিম-মুশফিকদের সংবাদ সম্মেলন। সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শুধু তারা নন; জাতীয় দল, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারসহ সবাই এই ধর্মঘটের অন্তর্ভুক্ত।
সাকিব আল হাসানের কথায়, ‘জাতীয় লিগ থেকে শুরু করে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বলেন, জাতীয় দলের প্রস্তুতি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বলেন, সবগুলোই এর অন্তর্ভুক্ত। এবং সেটা আজ থেকে।’
হঠাৎ করে কী এমন হল, যে কারণে বলতে গেলে এ ধরনের নজিরবিহীন ধর্মঘটে গেলেন টাইগাররা? সাকিবের মতে, ‘দেশের ক্রিকেট ঠিক পথে নেই।’ তারা মোট ১১ দফা দাবি পেশ করেছেন। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
বিপিএল এবং ডিপিএল আয়োজনে যত অনিয়ম তা সংশোধন করা, জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতন ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো, ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (কোয়াব) চেয়ারম্যান-সভাপতির পদত্যাগ, সারা বছরের জন্য ক্রিকেট ক্যালেন্ডার তৈরি, মাঠ পরিচর্যায় থাকা কিউরেটরদের বেতন বাড়ানোসহ মোট ১১ দফা দাবি তাদের।
ক্রিকেটারদের দাবিতে গুরুতর আরও একটি অভিযোগ রয়েছে। তা হল- ঘরোয়া ক্রিকেট বিশেষ করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনিয়ম ও দুর্নীতির অবসান।
জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতন বৃদ্ধি, কিংবা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি হয়তো আলোচনার দাবি রাখে, তবে ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দুর্নীতির অবসানে শিগগিরই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ক্রিকেটারদের এই দাবি পূরণে বিন্দুমাত্র সময়ক্ষেপণ করার পক্ষে আমরা নই।
পাশাপাশি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে থাকায় অনূর্ধ্ব–১৯ দলের খেলোয়াড়দের এ আন্দোলনের বাইরে রাখার বিষয়টি যৌক্তিক। একইসঙ্গে এমন ধর্মঘটের কারণে আন্তর্জাতিক শিডিউল বাস্তবায়নে যেন কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি না হয়, সেই দিকেও ক্রিকেটারদের খেয়াল রাখতে হবে। এমন ধর্মঘটের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টাইগার ক্রিকেট সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে বলে আমরা মনে করি।
এই অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতায় বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে বর্হিবিশ্বে ভুল বার্তা পৌঁছাক, তা কোনোভাবেই আমাদের কাম্য নয়। বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী তাৎক্ষণিক বক্তব্যে অবশ্য সমস্যা সমাধানে যতদ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন। আমরাও এমনটাই আশা করি। এজন্য শিগগিরই ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসে তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলো সুরাহা করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।