জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দীর্ঘ চার মাস সিন্ডিকেট সভা না হওয়ায় নতুন শিক্ষক নিয়োগ বন্ধের দাবি এবং অবিলম্বে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করে স্থগিত বিষয়গুলোর সুষ্ঠু সমাধানের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশ।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ ব্যানারে উপাচার্যের কার্যালয়ের প্রবেশ পথ ঘেরাও করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তাদের অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখে। অবরোধ ঘেরাও কর্মসূচিতে উপাচার্য বিরোধী প্যানেলের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক অংশ নেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একাংশের মুখপাত্র ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ জানান, বার বার প্রশাসনের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসলেও সমস্যা সমাধানে আজ পর্যন্ত কোন আলোচনা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। রমজান মাসে আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল কোন আন্দোলনে যাবো না। কিন্তু একটি বিভাগে ৩৪ জন শিক্ষক থাকার পরও অযাচিতভাবে নতুন ৪ জন শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা করছে প্রশাসন। আমাদের যৌক্তিক দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন ক্যাম্পাসে। অবিলম্বে উপাচার্য আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে।
এদিকে, কার্যালয় ঘেরাও থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম নিজ কার্যালয়ে আসেননি। এমনকি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের বাধার মুখে দুপুর আড়াইটার দিকে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একটি আপগ্রেডিং ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪ জন অস্থায়ী প্রভাষক নিয়োগের সিলেকশন বোর্ড স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অবরোধ কর্মসূচির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধ কর্মসূচি কখনও ভালো কিছু বয়ে আনেনা। আলোচনার পথ খোলা আছে সব সময়। তারাতো (আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ) আর বাইরের কেউ নন। আমাদেরই শিক্ষক। সুতরাং সমস্যার সমাধান অবশ্যই আছে।
নতুন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, একটি বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থীর প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে। তাই এটি নিয়ে দল ভিত্তিক রাজনীতি করার কিছু নাই। তারা (আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ) যেহেতু আপত্তি জানিয়েছেন, তাই আজকের মতো নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন, সিন্ডিকেট পরিচালনা বিধি লঙ্ঘনের প্রতিবাদ ও অবৈধভাবে ডিন-প্রভোস্ট ও প্রক্টোরিয়াল বডির অপসারণের প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের দাবিতে প্রায় কয়েক মাস যাবৎ আন্দোলন করে আসছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।