জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় মন্ত্রিসভার সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ প্রধান হিসাবে দলের সভাপতিমণ্ডলী, কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে জনকের প্রতিকৃতিকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
১৯২০ সালে গোপালগঞ্জের নিভৃতপল্লী টুঙ্গিপাড়ার শেখ লুৎফুর রহমান এবং সায়রা বেগমের ঘরে জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। মা-বাবার স্নেহের খোকা নিজ বিদ্যালয়ের ছাদ সংস্কারের দাবিতে নেতৃত্ব দিয়ে একটি দল নিয়ে যান অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের কাছে।
এরপর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ, মানুষের প্রতি মমত্ববোধ আর রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় তিনি হয়ে উঠেন বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক।
১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম স্টুডেন্ট ফেডারেশনে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৪৮ সালে তিনি ছাত্রলীগ গঠন করেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ যা পরে হয় আওয়ামী লীগ।
৫২’র ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার পর ১৯৬১ সালে গোপনে গঠন করেন স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ। ১৯৬৩ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ৬৬’র ছয় দফা আর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার পথ ধরে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান।
৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও সরকার গঠন করতে দেয়নি পাকিস্তানিরা। স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন রূপ নেয় স্বাধীনতার আন্দোলনে।
বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশ কৃতজ্ঞচিত্তে পালন করছে জনকের ৯৭তম জন্মদিন।
বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটি পালন করা হচ্ছে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে। আজ সরকারি ছুটি। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী পালনে নিয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারসহ সব গণমাধ্যমে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে দিবসটি যথাযথভাবে উদযাপন করা হচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়ায় কর্মসূচি: আজ সকাল ১০টার দিকে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা সেখানে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেবেন। এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে আয়োজিত শিশু সমাবেশ ও আলোচনা সভায় বক্তব্য দেবেন। পরে একই স্থানে বইমেলার উদ্বোধন ও সেলাই মেশিন বিতরণ করবেন তিনি।