দেশের ভেতর ছড়িয়ে পড়া দুই শতাধিক রোহিঙ্গাকে শরণার্থী শিবিরে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেছেন, কক্সবাজার, উখিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়া এসব রোহিঙ্গাদেরকে পুলিশ, র্যাব হাইওয়ে পুলিশ ও বিজিবি’র সহায়তায় শরণার্থী শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরে সাম্প্রতিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আইজিপি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা বিদেশি, অন্য দেশের নাগরিক। এদেশে থাকার কোনও বৈধ কাগজপত্র তাদের নেই। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানোর কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, মানবিক কারণে তাদেরকে বিভিন্ন জায়গা থেকে আটক করে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। যাতে তাদের আইডি কার্ড দেওয়া যায়। ডাটাবেজ তৈরি করা যায়। বাইরে থাকলে তো আর এটা করা যাবে না। তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।’
সারাদেশে রোহিঙ্গারা যাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে সেজন্য আটক করে ক্যাম্প ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে আইজিপি বলেন।
রোহিঙ্গারা বাইরে গেলে কি কি সামাজিক সমস্যা হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা তো চেষ্টা করবে বিভিন্ন উপায়ে এদেশের নাগরিক হওয়ার। এটা করতে গিয়ে তারা প্রতারকের খপ্পড়ে পড়তে পারে। হয়রানির শিকার হতে পারে। সেজন্য তাদের ক্যাম্পে থাকা উচিত। কোথাও রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে এ তথ্য কারও কাছে থাকলে তা পুলিশকে জানানো উচিত।’
রিলিফের নামে কেউ রোহিঙ্গাদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করছে কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে প্রতিবেশী দেশে হামলা করার সাহসও কেউ পাবে না। তা বরদাস্ত করা হবে না। রিলিফ দেওয়ার নামে যাতে কেউ কাউকে মোটিভেট করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারিও রয়েছে। আর যে-ই রিলিফ দিতে যাক না কেন তাদেরকে স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে জানাতে হবে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী রিলিফ দিতে হবে।’
এসময় আইজিপি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখেই দুর্গাপূজা ও আশুরা উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মোতায়েন থাকবে বিজিবি ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য। শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা ও আশুরা।
“দুই সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি যেন না হয়, সেজন্য দুই সম্প্রদায়ের নেতাদেরকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।”
এবার তাজিয়া মিছিলের নিশানার লাঠি ১২ ফুটের বেশি হতে পারবে না। এছাড়া ব্যাগ, পোটলা, ছুরি, কাঁচি এসব মিছিলে নিয়ে যাওয়া যাবে না। যে কেউ মিছিল নিয়ে হোসনি দালান এলাকায় ঢুকতে পারবে না বলে জানান পুলিশের মহাপরিদর্শক।
সংবাদ সম্মেলনে চাল মজুদদারদের কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে-সে বিষয়ে জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, ‘দেশে এ নিয়ে থাকা আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে এলিট ফোর্স র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সহেলী ফেরদৌস সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।