যেকোন মৃত্যুই কষ্টের, তবে সেই মৃত্যু যখন হয় কারও অপঘাতে তখন তা আরও বেশি বেদনাদায়ক। রাজধানীতে বেশ কিছুদিন ধরে বিশেষ করে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাত কিংবা আক্রমণে নিহত হওয়ার ঘটনা বেড়েই চলেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়: শুক্রবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালের নারী কর্মী হেলেনা বেগম ছিনতাইকারীর গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন। কর্মজীবী এই নারী শুক্রবার ভোরে স্বামীর সঙ্গে বরিশাল থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। অথচ বাসায় পৌঁছানোর আগেই রাস্তা পার হওয়ার সময় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন তিনি। ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে ছিনতাইকারীরা হাতের ব্যাগ ধরে টান দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই গাড়িতেই পিষ্ট হন তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই হেলেনা বেগমের মৃত্যু হয়। এর আগে রাজধানীর দয়াগঞ্জে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া এক নারীর কোল থেকে পড়ে গিয়ে আরাফাত নামে সাত মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই শিশুর বাবা-মা আরেক সন্তানের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। কিন্তু এক সন্তানের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসে তাদেরকে ফিরতে হয়েছে আরেক সন্তানের লাশ নিয়ে! তার আগে একইভাবে টিকাটুলিতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে বেসরকারি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু তালহা নিহত হয়েছেন। তিনি অবশ্য নিজে ছিনতাইয়ের শিকার হননি। ছিনতাইয়ের শিকার এক নারীর সহায়তা করতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের ধাওয়া দিলে তারা তালহাকে কুপিয়ে খুন করে। এসব ঘটনা ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া এমন আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে। ছিনতাইকারীদের হাতে এভাবে সাধারণ মানুষের খুন হওয়ার ঘটনা দিন দিন উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাফল্য প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এমনকি পুলিশের অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে এসব ছিনতাইকারীদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ছিনতাইকারীদের কাউকে গ্রেপ্তার করলে আইনের ফাঁকফোঁকর দিয়ে আদালতেও খুব সহজে তারা জামিন পেয়ে যায়। এই বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে হবে। ছিনতাই এবং সাধারণ মানুষের নিহত হওয়ার ঘটনা যেকোন মূল্যে প্রতিহত করতে হবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে আমরা আহ্বান করছি।