দলবদল নিয়ে বার্সেলোনা ও নেইমারের মধ্য শুরু হওয়া তিক্ততা যেন শেষেই হচ্ছে না। কর্মকর্তাদের উপর চটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বার্সাকে বরখাস্তে উয়েফার কাছে দাবি জানিয়েছিলেন নেইমার। এবার তার পাল্টা হিসেবে পিএসজিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে তাড়াতে ছক কষছে লা লিগা।
স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা জানাচ্ছে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্যারিস সেন্ট জার্মেইন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক এটা লা লিগা চায় না।
লা লিগার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার তেবাস বলেছেন, গত আগস্টে উয়েফার কাছে এই মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে যে, লিগ ওয়ানের দলটিতে সম্পূর্ণ অর্থায়ন করা হচ্ছে একটি রাষ্ট্র থেকে। আর দেশটি হচ্ছে কাতার।
২২২ মিলিয়ন ডলারে ট্রান্সফার ফি’র রেকর্ড গড়ে নেইমার পিএসজিতে চলে যাওয়া পর থেকেই দু’পক্ষের মধ্য সম্পর্কেটা রীতিমত যুদ্ধে রূপ নিয়েছে।
ফরাসি পত্রিকা এল-ইকুপে এক প্রতিবেদনে বলছে, পিএসজির বিরুদ্ধে উয়েফা যে তদন্ত করছে সেটা শুধু লা লিগার অভিযোগের কারণেই।
তেবাস বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি যে গত পাঁচ বছরে পিএসজি এবং ম্যানচেস্টার সিটি অন্য যেকোনো ক্লাবের চেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে। তাদের বাস্তব আয় এই বিনিয়োগের ন্যায্যতা প্রমাণ করে না। এদের বিনিয়োগ রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ বা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চেয়েও অনেক বড়।’
লা লিগা প্রধান আরও বলেন, ‘তাই বলা যায় রাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বেনামী স্পনসর আছে। রাজস্বের সঙ্গে কাতার রাষ্ট্রটি সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সম্পর্কিত এবং পিএসজি অর্থনৈতিকভাবে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে।’
৪৪ পেজের অভিযোগপত্রে লা লিগা নির্দিষ্ট করে দেখিয়েছে যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্য ক্লাবগুলোর চেয়ে অনেক বেশি বিনিয়োগ করেছে পিএসজি। ২০১৪ সালে ক্লাবটি বিনিয়োগ করে ৩৪৪ মিলিয়ন ইউরো। একই সময়ে ম্যানইউ বিনিয়োগ ২৩৭ মিলিয়ন, রিয়াল মাদ্রিদ ২২৪ মিলিয়ন ও বার্সেলোনা ১৮৫ মিলিয়ন ইউরো।
টেলিভিশন স্বত্বের আয়েও রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে পিএসজি। রিয়ালের ৪৭ মিলিয়ন ইউরোর বিপরীতে পিএসজির আয় ১২১ মিলিয়ন ইউরো। যেটা রিয়াল, ম্যানইউ এবং বার্সার চেয়ে ৭৩ শতাংশ বেশি।
লা লিগার অভিযোগের পর পিএসজির বিরুদ্ধে এরই মধ্য তদন্ত শুরু করেছে উয়েফা। তবে ক্লাবটির বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপের আশা করছে লা লিগা। আর্থিক অনিয়মের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয় তেমনটাই চাইছে লা লিগা।
উয়েফা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘উয়েফা কি করে সেটা দেখতে বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করব। যদি কিছুই না হয়, আমরা ইইউকে অভিযোগ করবো। কারণ এটি চালিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। আর পিএসজি যদি দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের প্রতিযোগিতা করতে দেওয়া ঠিক হবে না।’