Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

চিন্তাধারা ও স্বভাব-চরিত্রের জন্য মস্তিষ্কের গঠন দায়ী

প্রত্যেকটি মানুষেরই ব্যক্তিত্ব একে অপরের থেকে ভিন্ন। এমনকি দুই জমজ ভাই বা বোনেরও চিন্তাধারা ও স্বভাব-চরিত্র আলাদা হয়। এর সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্কের গঠনের বেশ বড় একটি সম্পর্ক রয়েছে বলে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা গেছে।

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইতালির স্নায়ুবিজ্ঞানীদের একটি দল সমগ্র পৃথিবী থেকে মোট ৫০০ জন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মস্তিষ্কের স্ক্যানের ওপর গবেষণা চালান।

গবেষণায় দেখা যায়, যাদের মস্তিষ্কের ‘কর্টেক্স’ বা বাইরের স্তর তুলনামূলক মোটা ও কম কুঁচকানো তাদের মধ্যে চুপচাপ বা একা একা থাকার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

অন্যদিকে মনখোলা মানুষগুলোর মস্তিষ্কের স্ক্যানে দেখা যায়, তাদের মস্তিষ্কের বাইরের স্তরটি তুলনামূলক পাতলা। গবেষণার জন্য কর্টেক্সের পুরুত্ব ও ভাঁজের পরিমাণ ছাড়াও মস্তিষ্কের সার্বিক আয়তনও যাচাই করা হয়।

মস্তিষ্কের স্ক্যান বিশ্লেষণ ছাড়াও পরীক্ষাধীন ওই ৫০০ ব্যক্তিকে একটি ‘কোয়েশ্চেনেয়ার’ বা প্রশ্নমালা পূরণ করতে দেয়া হয়। মানুষগুলোর ব্যক্তিত্বকে এর মাধ্যমে ৫টি বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বিচার করা হয়: ১. নিউরোটিসিজম (মানুষটি কতটা গম্ভীর বা অমিশুক), ২. বহির্মুখী (মানুষটি কতটা উদ্যমী ও মিশুক), ৩. খোলামেলা (মানুষটি কতটা মুক্তমনা), ৪. অমায়িক ও বন্ধুত্বসুলভ এবং ৫. ন্যায়পরায়ণ।

স্ক্যান আর প্রশ্নমালার উত্তর বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্তে আসেন গবেষকরা।

সোশ্যাল কগনিটিভ অ্যান্ড এফেক্টিভ নিউরোসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটির জন্য তথ্য বিশ্লেষণ করা ছিল খুব জটিল। তবে গবেষণাটি খুবই দরকার ছিল বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. লুকা পাসামন্টির মতে, গবেষণাটি থেকে পাওয়া তথ্য সময়ের সাথে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে বুঝতে বিজ্ঞানীদের আরও সাহায্য করবে। “ব্যক্তিত্বের মৌলিক বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি আমাদেরকে সুস্থ মানুষের মস্তিষ্কের গঠনের সঙ্গে এর কাজের সম্পর্কটাকে আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে। তাহলে স্নায়ুমনোরোগীদের মস্তিষ্কে কী কী পার্থক্য থাকে তা খুঁজে বের করা সম্ভব হবে,” বলেন তিনি।

Exit mobile version