ব্যবসায়ীদেরকে চাঁদাবাজমুক্ত পরিবেশের আশ্বাস দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, কোনো ধরনের চাঁদাবাজির ঘটনা জানতে পারলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে পবিত্র রমজান উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি ও মহানগর দোকান মালিক সমিতি আয়েজিত ‘পরিমিত ক্রয় ক্যাম্পেইন প্রোগ্রাম-২০১৯’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোথাও কোনো ধরনের চাঁদাবাজি হলে আমাদের জানান, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই চাঁদাবাজমুক্ত পরিবেশে সবাই ব্যবসা করবেন, ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের পণ্য কিনবেন।
কারওয়ানের বাজারের বর্তমান ব্যবসায়িক পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, এক সময় রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় প্রায় সময়ই মানুষ খুন হতো, ব্যবসায়ীরা শান্তিতে ব্যবসা করতে পারতেন না। আজ ব্যবসায় শান্তি ফিরে এসেছে, ক্রেতার টাকাও ছিনতাই হয় না।
তবে সেই সমস্যা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি বলেও জানান তিনি। এ জন্য ব্যবসায়ীদের ব্যর্থতাকে দায়ী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (ব্যবসায়ী) যদি প্রশাসনকে না জানান তাহলে কিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোথাও কোনো ধরনের চাঁদাবাজি হলে একবার সাহস করে আমাদের জানান, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ধরনের চাঁদাবাজকে আমরা প্রশ্রয় দেবো না। সর্বদা সব জায়গায় শান্তি থাকবে, এটাই সরকারের প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘খাদ্যে যারা ভেজাল মেশায় তারা খুনি। এদের ফাঁসি দিতে হবে।’ এ জন্য আইনের সংস্কারও চেয়েছেন তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কারও ঘাড়ে কোনও অভিযোগ দেবেন না। কোথাও অন্যায্য কিছু হলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। খাদ্যে ভেজাল মেশালে তাদের ফাঁসির সাজা হওয়া উচিত। ব্যবসায়ীরা কাউকে চাঁদা দেবেন না। সৎ ব্যবসায়ীর সঙ্গে আমরা আছি। অসৎ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরা নেই। সৎ ব্যবসায়ীরা কোনও ভয় পাবেন না।’
এ সময় উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বেনজির আহমেদ বলেন, ‘পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে ইনভয়েস প্রথা চালু করুন। এটা চালু না করলে শুভঙ্করের ফাঁকি থেকে বের হতে পারবো না।’
র্যাব প্রধান বলেন, ‘কিছু অসৎ ব্যবসায়ীর জন্য বাজারে মূল্য বাড়ছে। এই অংশকে আমরা সার্জারি করে আলাদা করে দেব। এদেরকে অপারেশন করে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া হবে। দরকার নেই এই অংশের। যারা ভেজাল করে তারা খুনি। খুন করলে যদি ফাঁসি হয়, যে খাদ্যে ভেজাল মেশায় তারও ফাঁসি হতে হবে।’
অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে দেড়শ টাকা দিয়ে দুই দিনের ইফতারের কাঁচাবাজার কিনেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারে একটি প্যাকেজের আওতায় মিলবে এসব পণ্য। এখানে একটি ছোট পরিবার দুই দিন চালাতে পারবে- এমন পরিমাণে একটি থলে তৈরি করে বিক্রি করা হয়। এতে এক কেজি শশা, ৫০০ গ্রাম বেগুন, এক হালি লেবু, এক কেজি পেঁয়াজ, ৩০০ গ্রাম কাঁচা মরিচ, ৫০০ গ্রাম টমেটো, এক কেজি আলু এবং আধা কেজি গাজর ছিল।
পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারের দুই দিনের ইফতারে যে পরিমাণ কাঁচাবাজার লাগে তা বিক্রি করা হচ্ছে মাত্র ১৫০ টাকায়। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি ও ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতি যৌথভাবে প্রথম দশ দিন এ পণ্য বিক্রি করবে।