কিউবার মহান বিপ্লবী নেতা ও দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি ফিদেল কাস্ত্রো মারা গেছেন। ৯০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করলেন তিনি।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল তার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছে। তবে এর বেশি কোনো তথ্য এখনো জানানো হয়নি।
ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৫৯ সালে কিউবায় সফল বিপ্লবের পর থেকে ফিদেল ক্যাস্ট্রো একদলীয় রাষ্ট্র হিসেবে প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে কিউবা শাসন করেন। ২০০৮ সালে অবশেষে ভাই রাউল ক্যাস্ট্রোর হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক আলোচিত-সমালোচিত এই বিপ্লবী নেতাকে অসঙখ্যবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিবারই তিনি অল্পের ওপর দিয়ে বেঁচে গেছেন। কিন্তু এবারের বার্ধক্যের কাছে হার মেনে গেলেন কাস্ত্রো।
ক্যাস্ট্রোর সমর্থকরা সবসময়ই তাকে এমন একজন মানুষ হিসেবে তুলে ধরে এসেছেন যিনি কিউবাকে তার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তবে ক্যাস্ট্রোর সমর্থকরা সবসময়ই তার বিরুদ্ধে বর্বরভাবে বিরোধী দলকে দমন-পীড়নের অভিযোগ করে এসেছেন।
১৯৫৯ সালে সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে কিউবার মার্কিন সমর্থিত একনায়ক ফুলগেন্সিও বাতিস্তাকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসেন ফিদেল কাস্ত্রো। যুক্তরাষ্ট্রের নাকের ডগায় একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিশ শতকের কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। স্নায়ুযুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মার্কিন নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদের জয়জয়কারের মধ্যেও এই বিপ্লবী নেতা সমাজতান্ত্রিক কিউবাকে টিকিয়ে রেখে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রবাদ পুরুষে পরিণত হন।
কিউবা বিপ্লবের পর থেকে প্রায় অর্ধশতক ধরে পরপর ১০ জন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাস্ত্রোকে হত্যা বা উৎখাতের জন্য টানা চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সবকিছুকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে কিউবার ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন।
বিপ্লবের পরিকল্পনায় কাস্ত্রের প্রথম পদক্ষেপ ছিল মেক্সিকো থেকে কিউবায় আক্রমণ চালানো। ১৯৫৬ সালের ২৫শে নভেম্বর তার ছোট্ট বাহিনী কিউবার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সেখানে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাদের আক্রমণ করে বাতিস্তার সেনাবাহিনী। কাস্ত্রোর ৮২ জন সহযোগী মারা যান অথবা কারাবন্দী হন আর মাত্র ২২ জন ওই যাত্রায় বেঁচে যান।
সিয়েরা মস্ত্রা পর্বতমালায় বিদ্রোহীদের ছোট্ট একটা অংশ পুনরায় সংঘবদ্ধ হতে পেরেছিল। সেখানে তারা ২৬ জুলাইয়ের আন্দোলনে গেরিলা এবং স্থানীয় লোকজনদের সহযোগিতা পেয়েছিলেন।