সদা বিনয়ী হিসেবে সুপরিচিত এপিজে আব্দুল কালাম মৃত্যুও কয়েক ঘণ্টা আগেও একজন সৈনিকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। শিলং ভ্রমণের সময় তার গাড়িবহরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সেনা সদস্যকে টানা আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে দায়িত্ব পালন করতে দেখে কাছে ডেকে বলেছিলেন, ‘আমি দুঃখিত, আমার জন্য তোমাকে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হলো’।
জবাবে কালাম-মুগ্ধ সৈনিকের উত্তর ছিলো, ‘স্যার, আপনার জন্য ৬ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকাও কিছুই নয়’।
আব্দুল কালামের জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টার সঙ্গী তার সহ-লেখক সৃজন পাল সিংয়ের বর্ণনায় উঠে এসেছে এই মহৎপ্রাণ মানুষটির জীবন সায়াহ্নের এরকমই কিছু মুহূর্ত। ভার্চুয়াল জগতে প্রয়াত কালামের স্মৃতি তুলে ধরতে ‘ইন মেমোরি অব ড. কালাম’ নামে একটি টুইটার একাউন্ট পরিচালনা করে যাবেন বলে জানিয়েছেন সৃজন।
ড. কালামের সফরসঙ্গী হিসেবে শিলং যাত্রায় ৫ ঘণ্টার ভ্রমণে টুকরো আলাপ এবং ছবি দিয়ে গুরুসম মানুষটির সাথে শেষমুহূর্তের স্মৃতি সামাজিক মাধ্যম টুইটার ও ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
সৃজন টুইটারে লিখেছেন, ২৭ জুলাই শেষবারের মতো গাঢ় রঙের ‘কালাম স্যুটে’ তাকে চমৎকার লাগছিলো। তবে সৃজন জানতেন না আর সেই বেশে দেখবেন না প্রিয় মানুষটিকে।
শিলংয়ে আইআইএম কলেজে বাসযোগ্য পৃথিবী নিয়ে বক্তৃতার জন্য রওনা দিয়েছিলেন ড.কালাম সঙ্গী হয়েছিলেন সৃজন। আড়াই ঘণ্টার বিমান ভ্রমণ এবং তারপর সড়ক পথে আরও আড়াই ঘণ্টা, পাঁচ ঘণ্টার ওই ভ্রমণে শুরুতেই সাম্প্রতিক নানা ইস্যুতে মানুষের প্রাণহানী এবং পরিবেশ-প্রকৃতিকে দূষণ নিয়ে কথা হয়েছিলো তাদের।
তিনি বলেছিলেন, ‘দূষণের কারণে দিন দিন পৃথিবী বসবাস অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে, এই মাত্রায় চলতে থাকলে আগামী ৩০ বছর পর হয়তো নতুন ঠিকানা খুঁজতে হবে মানবজাতিকে’।
পৃথিবীকে বাঁচাতে সৃজনের মতো তরুণদের তাগিদ দিয়ে গেছেন তিনি। এছাড়াও ভারতের জাতীয় নানা বিষয় এবং রাজনীতির কলুষতা নিয়েও আক্ষেপ করেছিলেন ড.কালাম।