জার্মান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ দাবি করার বিষয়কে সরকার এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলের নেতারা বলছেন: জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি হয় ভুল উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে, নয়তো আওয়ামী লীগ এবং সরকার বিরোধী চক্র তাদের ব্যবহার করেছে। এই প্রতিবেদন ষড়যন্ত্রের অংশ।
জার্মান প্রতিষ্ঠান ‘বেরটেলসম্যান স্টিফটুং’ এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়: ‘বাংলাদেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং সেখানে এখন গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদণ্ড মানা হচ্ছে না। পর্যালোচনা চলাকালে (২০১৫) বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মৌলবাদীদের হামলা সংঘটিত হতে দেখা গেছে।
এসময় সারাদেশে সহিংসতা চালানোর জন্য প্রতিবেদনে দায়ী করা হয়েছে বিরোধী দল বিএনপিকেও।
প্রতিবেদনে দুই প্রধান নেত্রীর মধ্যকার বিরোধ বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল মতিন খসরু বলেন: তাদের বলার অধিকার রয়েছে এবং তারা বলতেও পারে। কিন্তু তাদের গবেষণা ভিত্তিহীন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার শতভাগ শর্ত সরকার পালন করছে।
তিনি দাবি করেন: বর্তমান সংসদের প্রত্যেক সদস্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত। একইসঙ্গে এটি একটি প্রাণবন্ত পার্লামেন্ট। সুতরাং প্রশ্ন উত্থাপনের কোন সুযোগ নেই।
সাবেক এ আইনমন্ত্রী আরও বলেন: বেরটেলসম্যান স্টিফটুংয়ের যে তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরী করেছে তা ভুল। যারা এ তথ্য সরবরাহ করেছে তারা আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের শত্রু। যাদের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের কোন সম্পর্ক নেই।
অপরদিকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মান যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের যেকোন দেশের তুলনায় ভালো দাবি করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন: যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের বিচারের সময় বাংলাদেশ বিরোধী চক্র বিশ্বব্যাপী লবিষ্ট গ্রুপ নিয়োগ করেছিলো। প্রচুর টাকাও ঢেলেছিলো বলে আমরা সেসময় শুনেছিলাম। তারাই এখন বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করছে। জামায়াত এবং যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগী বিএনপি এর পেছনে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের খারাপ ইমেজ তুলে ধরা এবং লবিষ্ট গ্রুপকে সহায়তার জন্য বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে অভিযুক্ত করেন তিনি।
‘বেরটেলসম্যান স্টিফটুং’ এর চলতি বছরের সূচক অনুযায়ী, ১২৯টি দেশের মধ্যে ৫৮টি দেশে একনায়কতন্ত্র জারি রয়েছে। ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫৫। এ বছর গণতান্ত্রিক দেশের সংখ্যা ৭১। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৭৪। গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদণ্ডও পূরণে ব্যর্থ নতুন পাঁচ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের পাশাপাশি রয়েছে লেবানন, মোজাম্বিক, নিকারাগুয়া ও উগান্ডা।