সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের সমালোচনার জন্য ক্ষমা চাইবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
রোববার রাতে চ্যানেল আই অনলাইনকে ইমরান বলেন, ‘আমি কোনো অপরাধীর পক্ষে নয় বরং মতপ্রকাশের পক্ষ নিয়েছি। যেহেতু শফিক রেহমান সাংবাদিক সেহেতু মতপ্রকাশের বিষয়টি আসছে। বিরোধী মত দমনের যে সংস্কৃতি শুরু হয়েছে আমি তার সমালোচনা করেছি মাত্র। আমি কোনো অপরাধ করিনি। তাই সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না’।
এর আগে ফেসবুক পোস্টে প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় সাংবাদিক শফিক রেহমানের গ্রেফতারের সমালোচনা করায় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র
ইমরান এইচ সরকারকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। একই সঙ্গে ইমরানকে বয়কটেরও আহ্বান জানান।
ক্ষমা চাইতে বলার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইমরান তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে।
তিনি বলেন, ‘আমি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ভিন্নমত প্রকাশের পক্ষে বলতে গিয়ে এখন নিজেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হারাচ্ছি’।
কোনো অপরাধীর পক্ষ নেননি জানিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, ‘মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের নথিতে শফিক রেহমানের নাম নেই। তাছাড়া এফবিআই কর্মীকে ঘুষ দিয়ে তথ্য নেয়ার চেষ্টাসহ ষড়যন্ত্রের যে চেষ্টা হয়েছিলো সেটির বিচার কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৫ সালেই হয়ে গেছে’।
ফেসবুক পেইজে দেয়া বক্তব্যের প্রধান দিকটি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমার লেখায় ৩টি বিষয় ছিলো। শফিক রেহমানের গ্রেফতারের নিন্দা জানানোর মাধ্যমে ভিন্নমত প্রকাশের স্বপক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছি। তবে আসল বিষয় হলো সরকার কেনো নিজেদের ওপর আঘাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে? দেশের সবারইতো বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। শুধু সরকার ঘনিষ্ঠ উঁচু তলার জন্য সুবিচার আর বাকী সবাই বিচার বঞ্চিত হবে এটা মানা যায় না। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, তনু হত্যার মতো জনসাধারণের ইস্যুগুলোর বেলায় কিন্তু জড়িতরা সবাই ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেলো। আর প্রতিপক্ষ দমনের যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে তারও অবসান চেয়ে লিখেছিলাম লেখাটা’।
৩৩ বছর বয়সী ইমরান ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রের দায়িত্বে আসার পর সারা বাংলাদেশে আলোচিত মুখ। ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক হিসেবে গণজাগরণ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন রংপুর মেডিকেল কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইমরান।
ইমরানের সমালোচনায় সরব জয় ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি আশাই করেছিলাম বিএনপি এটা নিয়ে মিথ্যা বলার চেষ্টা করবে। যদিও, আমি আশ্চর্য হয়েছি ইমরান সরকারের বিষয়ে। সম্ভবত শেষ পর্যন্ত তার আসল চেহারাটা উন্মোচিত হলো। এটা দেখে মনে হচ্ছে সে আমাদের বেশিরভাগ সুশীলের মতই, আরেকটা সুবিধাবাদী এবং মিথ্যাবাদী। হয়তো বিএনপি তাকে পয়সা দিয়েছে। কে জানে। যেভাবেই হোক, আমি তার প্রতি সব শ্রদ্ধা হারিয়েছি।’
‘তাকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে আমাদের সরকারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।আমি আমার সকল বন্ধু এবং ভক্তদের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, যারা তাকে অনুসরণ করেন তারা তাকে ফেসবুক থেকে আনফলো/আনফ্রেন্ড করুন। সে একজন অপরাধীর হয়ে কথা বলছে যে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছিলো’।