২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন)। প্রথমবারের মতো ৫ লাখ কোটির মাইলফলক ছাড়িয়ে এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার, ৫ লাখ ২৩ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। টাকার অংকে সবচেয়ে বড় ব্যয় পরিকল্পনা নিয়ে এবার অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো বাজেট দেবেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বাজেটের আগেই এবার সুসংবাদ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেছেন: এ বছর বাজেটের পর জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না। এটি ঐতিহাসিক; কারণ একদিকে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর, অন্যদিকে জাতির জনকের জন্মশত বর্ষ। সুতরাং এ বছর বাজেটে কোনো কিছুরই দাম বাড়বে না।
আমরা অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যে ভরসা রাখতে চাই। আমরা চাই, সব শ্রেণির মানুষের জন্য স্বস্তির হোক বাজেট।
বাজেট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীও ইতোমধ্যে কথা বলেছেন। তিনি জানান: সরকার চায় প্রতিটি মানুষ তার মৌলিক অধিকার নিয়ে বাঁচুক। একটি মানুষও গৃহহীন ও চিকিৎসাহীন না থাকুক এবং শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হোক। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেয়া এবং প্রতিটি মানুষকে একটি সুন্দর জীবন উপহার দেয়া। এই লক্ষ্য নিয়েই এবারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে বলে আমরা আশা করি।
এবারের বাজেটে আরও একটি সুখবর হলো, দেশে একাধিক মেগা প্রকল্প চলমান থাকার পরেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ কমানো হয়নি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে ৬১ হাজার ৯৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও কারিগরি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে চলতি বাজেটের চেয়ে বেশি। শিক্ষা খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া প্রশংসার দাবিদার বলেই আমরা মনে করি। একইভাবে কৃষিখাতকেও গুরুত্ব দিতে হবে বলে আমরা মনে করি।
এবারের বাজেটে ঘাটতি থাকবে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। ঘাটতি অর্থায়ন হবে সেই আগের মতোই বিদেশি ঋণ, অভ্যন্তরীন ঋণ এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে। তবে সেই ঘাটতি পূরণে সাধারণ মানুষের কর যেন না বাড়ে সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের ছাড় দেয়া যাবে না।
দারিদ্রের হার নামিয়ে আনা, নারী ও শিশুদের প্রতি বিশেষ মনোযোগসহ দেশের প্রতিটি মানুষ যাতে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে একটি সুন্দর জীবন-যাপন করতে পারে সেই বিবেচনায় এবারও কল্যাণমুখী বাজেট পেশ করা হবে বলেই আমাদের আশাবাদ।