বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ দ্বারা সারাবিশ্বের মতো আক্রান্ত বাংলাদেশও। এ মহামারি থেকে বাঁচতে সরকার দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছেন। যার ফলে অর্থনীতির চাকা থমকে গেছে। অন্যান্য অঙ্গনের পাশাপাশি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সংগীতাঙ্গন। আর্থিক দৈন্যতায় দিন কাটাচ্ছে অসংখ্য যন্ত্রশিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও সংশ্লিষ্ট অনেকের।
এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের কাছে সংগীতাঙ্গনের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরতে ‘সেভ দ্যা বাংলাদেশ মিউজিক ইন্ড্রাস্টি’ (SBMI) আয়োজন করে সংবাদ সম্মেলনের।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে গেল ৭ মে (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তারা বলেন, যে মানুষগুলো জীবনভর সকলের আনন্দের খোরাক যুগিয়েছে এবং ভূমিকা রেখেছে দেশ স্বাধীনের যুদ্ধ জয়ে, তারাই আজ চরম আর্থিক সংকটে। সারা বিশ্বের বিস্ময় বাংলাদেশকে তুলে ধরতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান যেমন ভূমিকা রেখেছে তেমনি সংগীতাঙ্গনের ভূমিকাও কোন অংশে কম নয়। এই সংগীতাঙ্গনকে বাঁচানো রাষ্ট্রের দায়িত্বের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হাসান (আর্ক), কণ্ঠশিল্পী আলম আরা মিনু, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ, সংগীত পরিচালক রিপন খান, কণ্ঠশিল্পী মিলন মাহমুদ, সেভ দ্যা বাংলাদেশ মিউজিক ইন্ড্রাস্টির আহবায়ক ও সংগীতার কর্ণধার সেলিম খান, সদস্য সচিব আতিক ডালিম, প্রচার সম্পাদক ও সমন্নয়ক ফারহাতুল জান্নাত এবং বিভিন্ন সুরকার, গীতিকার, যন্ত্রশিল্পী, সাউন্ড ও লাইটের মালিক ও টেকনিশিয়ানবৃন্দ।
এসবিএমআই এর উপদেষ্টা ও জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা হাসান বলেন, ‘শিল্পীরা সম্মানিত তাই তারা রাস্তায় নেমে তাদের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করতে পারছে না। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা মুখ বুজেও সহ্য করতে পারছে না। এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন যে সংগীতাঙ্গনকে বাঁচাতে আর্থিক অনুদান দিয়ে আপনি একজন রাষ্ট্রনায়কের পাশাপাশি একজন মমতাময়ী মায়ের মতো ভূমিকা রাখুন।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ও এসবিএমআই এর উপদেষ্টা ফরিদ আহমেদ বলেন, আজ সংগীতাঙ্গনকে বাঁচাতে এগিয়ে না আসলে কাল সংগীতকে পেশা হিসেবে নিতে ভয় পাবে আগামী প্রজন্ম। তাতে কালগহ্বরে হারিয়ে যাবে বাংলা সংস্কৃতির সংগীত ধারা।
কণ্ঠশিল্পী ও এসবিএমআই এর উপদেষ্টা মিলন মাহমুদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি কণ্ঠশিল্পী, সুরকার ও কলাকুশলীদের দুর্যোগ অবস্থায় পাশে থেকে পূর্বে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা আমরা কখনোই ভুলব না। আমরা আশা করি জাতীয় দুর্যোগের এই সময়ে আপনি এসবিএমআই কে নিরাশ করবেন না।
কণ্ঠশিল্পী আলম আরা মিনু বলেন, সংগীত শিল্পীরা সংগীতের বাইরে তেমন কিছুই করে না। দেশের দুর্যোগে সেই অসহায় শিল্পীদের, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনার মাতৃস্নেহের ছায়াতলে যদি আশ্রয় না দেন তবে বিপর্যস্থশিল্পীরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।’