দেশের প্রায় ৩০টির বেশি জেলা এখনও বন্যা কবলিত এই করোনাকালে। করোনার কারণে মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকিতে পড়ার পাশাপাশি এই বন্যা আরও সঙ্কটময় করে তুলেছে পরিস্থিতি।
সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) এর তথ্য অনুসারে, নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে বন্যা কবলিতরা।
বন্যাকবলিত এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। বেড়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। করোনা ও বন্যায় ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা মানুষগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় শুকনা খাবার সরবরাহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়া লোকজনের মধ্যে পানিবাহিত রোগবালাই দেখা দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ।
প্রাকৃতিক নিয়মে ধীরে ধীরে বন্যার পানি নেমে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বন্যার পানি নামার পাশাপাশি তীব্র হবে নদী ভাঙন। যা ইতিমধ্যে বহু ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নদীগর্ভে নিয়ে গেছে, সামনে হয়তো আরও জনপদ গদীগর্ভে হারাবে। অবস্থার ভয়াবহতা দেখে আজ (১৮ আগস্ট) কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নদীর তীরবর্তী বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণ বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন।
নদী ভাঙনের পাশাপাশি কর্মহীনতা ও খাদ্য সঙ্কটের বিষয়টি সামনে চলে আসে প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময়ে। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির বিষয়টিও চিন্তার কারণ। অন্যান্য বছরগুলিতে বন্যার সময়ে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ কাজের সন্ধানে শহরমুখী হয়, কিন্তু করোনার কারণে এবছর আগেই কর্মের সুযোগ হারিয়ে কর্মহীন বহু মানুষ শহর ছেড়েছে। কাজেই উভয়সঙ্কট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে। বন্যা ও বন্যা পরবর্তী এইসব বিপদ সামলাতে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপ জরুরি বলে আমরা মনে করছি। আমাদের আশাবাদ, সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে যথাযথ মনোযোগী হবেন।