বাংলাদেশকে ৮২ রানে গুটিয়ে দেয়ার আগেরদিন কিউরেটরদের পাশাপাশি তিনটি উইকেটে পরিচর্যা করতে দেখে ধন্দে পড়ে গিয়েছিলেন দিনেশ চান্দিমাল। কোনটি ম্যাচের উইকেট বুঝতে পারেননি। উইকেট নিয়ে এত গোপনীয়তা দেখে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। তাতে মিশে ছিল কিছুটা ক্ষোভও। ফাইনালের আগেও বিস্মিত হলেন লঙ্কান অধিনায়ক। এবার বিস্ময়ের সঙ্গে মিশে থাকল আনন্দও।
শনিবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ফাইনাল। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল, মাঠের চার নম্বর উইকেট নিয়ে চলেছে পরিচর্যা। কারও বুঝতে বাকি নেই ওটাই ফাইনালের উইকেট। দুপুরে লঙ্কান কোচ-ম্যানেজার-অধিনায়কও এসে দেখলেন উইকেট নিয়ে নেই কোন গোপনীয়তা। এবার রাখঢাক না দেখে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে চান্দিমালের আরেকদফা বিস্ময়।
‘আজও আমি, কোচ ও ম্যানেজার পিচ দেখতে গিয়েছিলাম। এখন তারা শুধু একটা পিচই প্রস্তুত করছে। আবার আমার একটা প্রশ্ন আছে- কেন তারা শুধু একটাই প্রস্তুত করছে? কেউ পিচকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তারা আমাদের যেমনটা দেবে পিচ অনুসারে সেখানেই খেলব।’
ম্যাচের আগেরদিন উইকেট না বুঝেও যে আক্ষেপ ছিল, সেটি মাঠে নামতেই উবে গেছে লঙ্কানদের। বাংলাদেশকে ৮২ রানে গুটিয়ে দিয়ে সফরকারী দল ম্যাচ জিতেছে ১০ উইকেটে। ফাইনালের ঠিক আগের ম্যাচে ওরকম জয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে দলটি।
‘আমাদের দলের জন্য এটা আসলেই খুব ভাল জয় ছিল। বিশেষ করে ফাইনালের আগে। আমরা ফাইনাল নিয়ে চিন্তা করছিলাম না। আমরা শুধু নির্দিষ্ট সময়ে একটাই খেলা খেলতে চেয়েছি। সেটা করার জন্য আমাদের একটা পদ্ধতি আছে। মৌলিক কাজগুলো করে যেতে হবে এবং পরিকল্পনার সঙ্গে লেগে থাকতে হবে। আমরা যদি সেটার প্রয়োগ ঘটাতে পারি, পরের ম্যাচে খেলায় থাকতে পারব।’
২০১৭ সাল খুবই বাজে গেছে লঙ্কানদের। ২০১৮ সালের শুরুতেই ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতে সব ব্যর্থতা পেছনে ফেলার হাতছানি দলটির। ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি তুলতে ভাল ক্রিকেট খেলার উপর জোর দিলেন চান্দিমাল।
‘গত দুই বছর দলের জন্য এবং ভক্তদের জন্য খুব কঠিন সময় ছিল। বিশেষ করে ওয়ানডে ফরম্যাটে। আমাদের কিছু ইনজুরি সমস্যাও ছিল। মাঝে মাঝেই সঠিক সমন্বয়টা নিয়ে খেলতে পারিনি। কিন্তু সেসব কোন অজুহাত হতে পারে না। যেখানেই খেলেন, ভাল পারফর্ম করার জন্য খেলোয়াড় থাকতে হবে। এখন নতুন কোচের অধীনে কিছু নতুন কায়দা-কৌশল পেয়েছি। তার ওপর আমাদের আস্থা আছে এবং আমরা কিছু আত্মবিশ্বাসও পেয়েছি। ফল নিয়ে চিন্তা করছি না। যখনই নামব, কিভাবে সবসময় ভাল খেলা যায় সেটা নিয়েই ভাবছি। দলে আসা এটাই এখন সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।’
নতুন দিনের আশায় শুরু করা শ্রীলঙ্কা দলে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে। কোচের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট সাফল্যে রাঙাতে হবে এমন কোন ব্যাপার আছে কিনা ক্রিকেটারদের মাঝে? সেই প্রশ্নে চান্দিমাল দিলেন দার্শনিক উত্তর, ‘আপনার যদি ভাল কোচ থাকে এবং ভাল ক্রিকেটার না থাকে, সেক্ষেত্রে ভাল ফল পাবেন না। কিন্তু যদি ভাল ক্রিকেটারও থাকে, আবার খারাপ কোচের সঙ্গে, সেক্ষেত্রেও ভাল ফল আসে না। কিন্তু এখন আমরা এ দুইয়ের মিশ্রণে আছি এবং আশা করছি আগামীকাল ভাল কিছু করার। এটাই আসল ব্যাপার।’