নোয়াখালীর একলাশপুরে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে বিভৎস নির্যাতন এবং ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনার শিউরে ওঠা বর্ণনা উঠে এসেছে মামলার এজাহারে। ভয়ংকর ওই রাতের নৃশংসতা তুলে ধরেছেন নির্যাতিতা গৃহবধূ।
মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ‘গত ২ সেপ্টেম্বর দীর্ঘদিন পরে তার স্বামী তার সাথে দেখা করতে আসে। রাতে হঠাৎ অজ্ঞাত কয়েকজনসহ আসামিরা শোবার ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তার স্বামীকে মারধর করে পাশের ঘরে নিয়ে যায়।’
পরে তারা টর্চলাইট জ্বালিয়ে নির্যাতিতাকে জোর করে বিবস্ত্র করার পর ধর্ষণের চেষ্টা করে। তাতে বাধা দিলে নারীকে নানাভাবে নির্যাতন করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে আসামিরা।
সেই রাতে নির্যাতিতার চিৎকারে অন্যরা এগিয়ে এলে আসামিরা তাকে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। এমন পরিস্থিতিতে আসামিদের ভয়ে ওই নারী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তারা তাকে বাড়িতে ফিরে আসতে বলে এবং নানান কুপ্রস্তাব দিতে থাকে।
‘শেষ পর্যন্ত আসামীদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ৪ অক্টোবর মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।’
এই ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিতা নারী। যার একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। আরেকটি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে।
দুটি মামলাতেই প্রধান আসামি বাদল (২২)। এছাড়াও মামলা দুটির অন্য আসামিরা হলো, রহিম (২০), আবুল কালাম (২২), ইস্রাফিল হোসেন মিয়া (২২), সাজু (২১), সামছুউদ্দিন সুমন (৩৯), আব্দুর রব চৌধুরী মিয়া লম্বা চৌধুরী (৪৮), আরিফ (১৮) ও রহমত উল্যা (৪১)।
তাদের মধ্যে বাদল, রহমত উল্যা ও রহিমকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়াও এই ঘটনার পেছনে ইন্ধনদাতা হিসেবে দেলোয়ার নামে আরেকজনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করে র্যাব।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, প্রায় মাসখানেক আগে দুই সন্তানের জননী ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে ভিডিওচিত্র ধারণ করে বখাটে একদল যুবক।
গতকাল রোববার দুপুরের দিকে সেই নির্যাতনের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশের পর ভাইরাল হয়ে। তাতে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের।
গত ৩২ দিন অভিযুক্ত স্থানীয় বখাটেরা গৃহবধূর পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখলেও ঘটনা থেকে যায় স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসনের অগোচরে!
স্থানীয়রা বলছে, গত মাসের ২ সেপ্টেম্বর উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।