‘আমাদের মেয়েরা জানে কীভাবে ভালো খেলতে হয়। আমার বিশ্বাস আছে মেয়েরা ভালো করবে। কাঙ্ক্ষিত জয় পাবো। ভারতকে হারানোর সামর্থ্য আমাদের আছে। আমরা সেটা মাঠে করে দেখাব।’ ফাইনালের আগেরদিন অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা বলেছিলেন এভাবেই।
মারিয়ারা কথা রেখেছেন। বাংলাদেশের ফুটবল সাফল্যে যোগ করেছেন আরেকটি উজ্জ্বল পালক। মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে লাল-সবুজের কন্যারা এনে দিয়েছেন শিরোপা। আনাই মোগিনির গোলে বিজয়ের মাসে আনা জয়। যে জয়কে মারিয়া-মগিনিরা বলেছেন, তাদের পক্ষ থেকে সকলের জন্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উপহার।
‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সবাইকে আমরা একটা উপহার দিলাম। দেশের মাটিতে খেলা, অনেক দর্শক এসেছিল মাঠে, তাদেরকে আমরা ভালো খেলা উপহার দিলাম। সবাইকে ধন্যবাদ, তারা আমাদের সমর্থন দিয়েছে। আমরা তাদের শিরোপা উপহার দিতে পেরেছি, অনেক ভালো লাগছে।’ ম্যাচ শেষে বলেছেন অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা।
পাঁচ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন স্বাগতিকদের শাহেদা আক্তার রিপা। টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও গেছে তার ঝুলিতে। সবকিছু দারুণ অনুভূতি দিয়েছে তাকে।
‘শিরোপা জিততে পেরে অনেক অনেক ভালো লাগছে। সবাই আমাদেরকে সমর্থন করেছে, আমরাও তার প্রতিদান দিয়েছি। (সর্বোচ্চ গোলদাতা) আসলে প্রত্যাশা করিনি, আল্লাহর রহমতে এটা হয়ে গেছে।’
ফাইনালে গোল পেতে বাংলাদেশকে ৮০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। সহজে গোলের দেখা না পাওয়ায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন মনিকা চাকমা। বললেন, ‘আসলে মাঠে যখন নেমেছি, আমরা পুরোটা সময় কঠিন পরিশ্রম করেছি। মারিয়ার সঙ্গে আমার বোঝাপড়া খুব ভালো। আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, খুব ভালো লাগছে। (আনাইয়ের শট) যখন গোলকিপার বল গ্রিপ করতে গিয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল গোল হবে।’
আঁখি খাতুন টানলেন দলীয় ঐক্যের কথা। এমন সাফল্য এনে দিয়েছে সেটিই, ‘আসলে কোচ যেভাবে বলেছেন, আমরা সেভাবে খেলার চেষ্টা করেছি। শুরুতে আমার পজিশন ডিফেন্স ছিল না, স্ট্রাইকার বা রাইট উইংয়ে খেলতাম। পরে কোচরা আমাকে যে পজিশনে খেলিয়েছেন, সেখানে খেলেছি। আমরা অনূর্ধ্ব-১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯-এই পর্যায়ে একসঙ্গে আছি। অনেকদিন একসঙ্গে থাকায় আমাদের বোঝাপড়া অনেক।’
শিষ্যদের মতোই আনন্দে ভাসছেন কোচ ছোটন, ‘এই প্রতিযোগিতায় মেয়েরা দুর্দান্ত খেলেছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই ছন্দে খেলেছে। আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল জিতব। ম্যাচে আধিপত্য রেখে খেলেছি। তবে গোল পেতে দেরি হচ্ছিল। অবশেষে গোল এসেছে। এই সাফল্য অনেক অনুশীলনের ফল। অভিজ্ঞ কিছু খেলোয়াড় ছিল, যারা ম্যাচের গতি ঘুরিয়ে দিয়েছে। এই ফলে বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবল আরও এগিয়ে যাবে। সঠিক পথেই আছে মেয়েদের ফুটবল।’