“আমাদের সবারই বুকের ভেতর অসংখ্য গল্প আছে। যারা সেগুলো লিখে প্রকাশ করতে পারেন তারা নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যবান। আর যারা সেই লেখা পড়েন তারা আরও বেশি সৌভাগ্যবান। কেননা এক জীবনের বাইরেও যে আরও জীবন আছে তা কেবল বই পড়েই জানা যায়।’’
তরুণ লেখক ও পাঠকদের উদ্দেশ্যে এভাবেই নিজের কথাগুলো ব্যক্ত করলেন বরেণ্য কথাসাহিত্যক হরিশংকর জলদাস।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনলাইন বুক রিভিউ প্রতিযোগিতার সমানপী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি অনুরোধ করে বলেন, নিজের জনপদের গল্প লিখুন, লিখুন চারিপাশের গণমানুষের ইতিহাস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য সংসদ (ডিইউএলএস) এর আয়োজনে প্রতিযোগিতার সমাপনীতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক চঞ্চল শাহরিয়ার, কবি আলতাফ শাহনেওয়াজ, তরুণ কথাসাহিত্যিক আবদুল্লাহ আল ইমরান এবং অন্বেষার প্রকাশন শাহাদাত হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিইউএলএসের সভাপতি আরিয়ান অপূর্ব দাস।
প্রতিযোগিতায় আবদুল্লাহ আল ইমরানের ‘কালচক্র’ এবং ‘দিবানিশি’ উপন্যাসের উপর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় একশ’ পাঠক তাদের পাঠপ্রতিক্রিয়া লিখে জমা দেন। সেরা ২০টি পর্যালোচনাকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রথম তিনজন পেয়েছেন ডেল বাংলাদেশের সৌজন্যে একটি করে ল্যাপটপ। ল্যাপটপ বিজয়ী সেরা তিনজন হলেন- মাহাদী হাসান, মালাকিন মারমা ইপা এবং ইজাজুল হক।
এসময় লেখক আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, শিল্প কলকারখানার উত্থান পর্ব নিয়ে অনেক গল্প-উপন্যাস রচিত হলেও পতন নিয়ে খুব বেশি কাজ হয়নি। অনুতাপের বিষয় পাটকে ঘিরে এদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবনাচারণ আবর্তিত হলেও আমাদের সাহিত্যে পাট কিংবা পাটকল শ্রমিকদের যাপিত জীবন অনুপস্থিত। উপন্যাসে আমি খুলনার সেসব চেনা মানুষদের মুখচ্ছবিই আঁকতে চেয়েছি।
সভাপতির বক্তব্যে সাদেকা হালিম বলেন, এ প্রজন্মের তরুণরা ডায়েরী লেখে না, বই পড়ে না। ফলে শিল্প-সাহিত্যমনা তরুণ প্রজন্ম থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এমন আয়োজন নবীন প্রজন্মকে নিশ্চয়ই বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলবে।
‘বই পড়ুন ল্যাপটপ জিতুন’ শিরোনামের এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় নভেম্বর মাসে।