অন্ধকার সরিয়ে আলোর পেছনে ছুটছেন তাসকিন আহমেদ। টাইগার পেসারের ফিরে আসার অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমের কাছে হার মানতে শুরু করেছে সব বাধা। তিন বছর আগে সবশেষ টেস্ট খেলা পেসার লাল বল হাতে ভয় ধরাচ্ছেন ব্যাটসম্যানদের মনে।
করোনাকালে জাগ্রত হওয়া নতুন উদ্যম তাসকিনকে দেখাচ্ছে আলোর পথ। লকডাউনের সময়টাতে ফিটনেস নিয়ে ঘাম ঝরানোর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে তার বোলিংয়ে।
শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট সিরিজের জন্য ঘোষিত ২৭ সদস্যের প্রাথমিক দলে আছেন তাসকিন। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের সেন্টার উইকেটে নেট সেশনে গতি-বাউন্সে ব্যাটসম্যানদের খাবি খাওয়াচ্ছেন প্রস্তুতিতে।
রোববার কোচদের অধীনে স্কিল ট্রেনিংয়ের প্রথমদিন লিটন দাসকে বারবার পরাস্ত করেছেন তাসকিন। সোমবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সৌম্য সরকারের সামনেও ছিলেন দুর্দান্ত। পেছনে দাঁড়িয়ে ওটিস গিবসন দিয়েছেন নির্দেশনা। মুগ্ধতা ছড়িয়ে পেয়েছেন পেস বোলিং কোচের বাহবা।
২০১৪ সালে অপার সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয় দলে তাসকিনের আগমন। বিপিএলে গতির ঝড় তুলে আগেই পেয়ে যান তারকাখ্যাতি। ওয়ানডে অভিষেকে ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে আলোড়ন তোলেন। হয়ে ওঠেন পেস আক্রমণে বাংলাদেশ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
ইনজুরির কারণে তাসকিন লম্বাসময় নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি কক্ষপথে। স্বপ্নের মতো উত্থান যার সেই পেসারকে সবশেষ বিশ্বকাপও খেলতে দেয়নি হাঁটুর চোট। ক্রমেই জাতীয় দল থেকে দূরে চলে যাওয়া তাসকিন উপলব্ধি করতে পেরেছেন, নিজেকে জাগাতে হবে নতুন করে।
ছেলের বদলে যাওয়ার গল্প চ্যানেল আই অনলাইনকে শুনিয়েছেন বাবা আব্দুর রশিদ, ‘খারাপ সময় তাসকিনকে ইতিবাচক কিছু শিক্ষা দিয়েছে। এটার প্রয়োজনও ছিল। ভালো সময়ের পাশাপাশি খারাপ সময়ও আসবে, এটাই স্বাভাবিক। যেভাবে শুরু হয়েছিল, ভেবেছিল হয়ত ওভাবেই যাবে। এখন বুঝতে পেরেছে বাস্তবতা।’
‘শুধু খেলায় না, সব কিছুতেই উত্থান-পতন থাকবে। দলের বাইরে দীর্ঘদিন থেকে অন্ধকার সময়টা দেখেছে। এখন ও অনেক সিরিয়াস ফিটনেস নিয়ে। ভাত খাওয়া ছেড়েছে। পছন্দের সব খাবার এড়িয়ে চলে। নিয়মিত ডায়েট, জিম করে গেছে।’
‘করোনার মাঝে ব্যক্তিগতভাবে ট্রেনার দেবাশীষ ঘোষের অধীনে কাজ করেছে। ঘরে বসে সাইক্লিং করেছে। গেস্ট রুমকে জিম বানিয়ে কাজ করেছে। এতটা কষ্ট আগে কখনোই করেনি। ইনজুরির কাছে হার মানতে নারাজ আমার ছেলে। এই মানসিকতা ধরে রাখতে পারলে ওর চেষ্টা বিফলে যাবে না।’