‘মনে হয় আমি বোমায় মারা যাচ্ছি। অথবা ওরা আমাকে মেরে ফেলতে পারে। যদি তাও না হয় আমি নিজেই আত্মহত্যা করবো। কারণ এ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাওয়ার মতো কোনো শক্তি আমার নেই।’
এভাবেই কথাগুলো পরিবারকে জানিয়েছিলেন, ইরাকের মসুলে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের হাতে আটক থাকাবস্থায় কিশোরী মেরিলিন নেভালাইনেন। তবে মেরিলিন যে আশঙ্কা করেছিলেন তা সত্য হয়নি। তিনি জীবিত অবস্থায় সুইডেনে বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে পেরেছেন।
মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকা নিউ ইর্য়ক টাইমস জানায়, আইএসে যোগ দেওয়ার জন্য ২০১৪ সালে ছেলে বন্ধুর সঙ্গে দেশ ছেড়েছিলো নেভালাইনেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। ইউরোপের কয়েকটি দেশ পাড়ি দিয়ে বন্ধুর সঙ্গে ইরাকের মসুলে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত সে টেরই পায়নি কত বড় ভুলের মধ্যে পা রেখেছে।
মসুলে পৌঁছে পরিস্থিতি বুঝতে পেরেই দেশে ফেরার জন্য আকুল হয়ে ওঠে নেভালাইনেন; কিন্তু তখন আর উপায় নেই। এক দিন অবশ্য সুযোগ পেয়ে মায়ের কাছে ফোন করে। কিন্তু তার ফেরাটা বা তাকে উদ্ধার করাটা মোটেও সহজ ছিল না। বেশ কয়েকবার নেভালাইনেনের মা-বাবা মেয়ের খোঁজে ইরাকে গেলেও ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয় তাদের। অবশেষে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ইরাকের কুর্দি বাহিনী তাকে উদ্ধার করে।
নেভালাইনেন কুর্দিস্তান টোয়েন্টিফোর চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছে, ‘২০১৪ সালে ছেলে বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতের পর থেকে আইএস ভিডিও দেখতে দেখতে আমি তাদের দিকে ঝুঁকে পড়ি। এরপর সে আমাকে আইএসে যোগ দিতে বললে আমি বলি, কোনো সমস্যা নেই। কেননা আইএস মানে আমি জানতাম না, তা ছাড়া ইসলাম সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিলো না।’
‘আমি যে বাড়িতে ছিলাম সেখানে কোনো বিদ্যুৎ বা পানি ছিল না। আমি সুইডেনে যে অবস্থায় বাস করতাম এটা ছিল তার থেকে পুরোপুরি ভিন্ন এক জগৎ।’
সুইডিশ গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইরাকে সে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। সন্তানসহ তাকে সুইডেনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।