সাধারণ সম্পাদক পদকে কেন্দ্র করে হঠাৎ শুরু সাসপেন্সের মধ্যে শনিবার শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তার পদে থেকে যাচ্ছেন বলে দলের বেশিরভাগ নেতা-কর্মী এতদিন মনে করলেও কয়েকদিন ধরে তার উত্তরসূরী হিসেবে আলোচিত হচ্ছে ওবায়দুল কাদেরের নাম।
তবে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, দলের সভাপতি এবং তিনিই জানেন কী হবে; আর কেউ জানেন না। চ্যানেল আইকে তিনি বলেছেন, সম্মেলনের সুন্দর সময়েই সব প্রকাশ করবে আওয়ামী লীগ।
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে উত্তাল সমুদ্রে ভাসমান নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চ। মঞ্চের প্রথম সারিতে দলনেত্রীসহ ১৩ জনের আসন আছে। দ্বিতীয় সারিতে বসবেন ৫৮ জন। সকাল ১০ টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সারা দেশ থেকে ৬,৫৭০ জন কাউন্সিলর এই সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে দলটির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচন করতে আসছেন। পাশাপাশি মহানগর থেকে তৃণমূল, সকল পর্যায়ের ৫০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী-সমর্থক এই সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় সমবেত হচ্ছেন।
চীন, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, শ্রীলংকাসহ ১২টি দেশের ৫৫ জন বিদেশি অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
২০ তম সম্মেলনকে উৎসবের আমেজ দিতে রাজধানীতে আলোকসজ্জা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে গড়া অস্থায়ী স্থাপত্য নির্মাণ, লেজার শোসহ চোখ ধাঁধানো জমকালো আয়োজন করা হয়েছে। মূল মঞ্চের পেছনে ৩৫ ফুট উচ্চতার এলইডি পর্দা থাকবে।মঞ্চের সামনের দিকে স্বচ্ছ কাঁচের খুঁটিবিহীন একটি গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে সাত হাজার অতিথির আসন থাকবে। ৪০ হাজারের অধিক মানুষের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্যান্ডেলের কাজ গত বৃহস্পতিবারই শেষ হয়েছে। প্যান্ডেলে প্রত্যেক জেলার জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
সম্মেলনে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অংশ নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শুক্রবার থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এবারের সম্মেলনের স্লোগান: ‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার।’ সরকারের উন্নয়ন, অগ্রগতির চিত্রসহ ভিশন ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে দলের ঘোষণাপত্রে থাকছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
সব প্রস্তুতি শেষ, এখন সম্মেলনের পর্দা ওঠার অপেক্ষা। তবে তার আগে এখন নেতা-কর্মীদের মধ্যে যেসব প্রশ্ন: প্রেসিডিয়াম সদস্য সংখ্যা বাড়লে সেখানে নতুন কারা আসবেন? পুরনো কেউ কি বাদ পড়বেন? প্রবীণ নেতা যাদেরকে গত কাউন্সিলে উপদেষ্টামণ্ডলীতে পাঠানো হয়েছে তাদের কেউ কি আবার প্রেসিডিয়ামে ফিরবেন? সাংগঠনিক সম্পাদক কি তরুণ নেতৃত্বের হাতেই থাকবে? সোহেল তাজ কি যুগ্ম সম্পাদক হচ্ছেন? দলের গুরুত্বপূর্ণ কোন পদে কি আসছেন সজীব ওয়াজেদ জয়? সৈয়দ আশরাফ কি থেকে যাচ্ছেন? নাকি তার জায়গায় আসছেন ওবায়দুল কাদের কিংবা অন্য কেউ?